‘ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি নয়’

বায়ু দূষণ করোনাভাইরাসে মৃত্যুঝুঁকি বাড়াতে পারে- বিশেষজ্ঞদের এমন আশঙ্কার মধ্যে ঢাকার বায়ু দূষণ ঠেকাতে ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাই কোর্ট।
ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
বন ও পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, ডিএমপি কমিশনার, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ১১ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এ সংক্রান্ত একটি বিচারাধীন রিটে সম্পূরক আবেদনের শুনানির পর মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছর ২১ জানুয়ারি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পক্ষে রিট আবেদনটি করা হয়।
ওই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত রুলসহ আদেশ দেয়।
আদেশে বলা হয়, ঢাকা শহরে যারা বায়ু দূষণের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুইবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে পরিবেশ অধিদপ্তরকে।
আদালত সেদিন বলে দেয়, রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা ১৫ দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে হবে, যাতে শুকনো মৌসুমে ধুলো ছড়িয়ে বায়ু দূষণ বাড়তে না পারে।
পাশাপাশি ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকাগুলোতে দিনে দুই বার করে পানি ছিটাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয় সিটি করপোরেশনকে।
শীতের শুরুতে শুষ্ক আবহাওয়ায় বায়ুদূষণ আবার উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। শীতের শুরুতে শুষ্ক আবহাওয়ায় বায়ুদূষণ আবার উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। এ আদেশের পর গত বছর নভেম্বরে এইচআরপিবির পক্ষ থেকে সম্পূরক আবেদন করে ৫টি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
সে আবেদনের শুনানির পর গত বছর ২৬ নভেম্বর আদালত ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকার বায়ু দূষণ কমাতে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য পরিবেশ সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়।
দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিআরটিএ ও ডেসকোর প্রতিনিধিকে কমিটিতে রাখতে বলা হয় এবং এই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এছাড়া প্রয়োজনে অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ করে রাস্তা, ফুটপাত, ফ্লাইওভার, ওয়াকওভারের যেসব জায়গায় ধুলাবালি, ময়লা বা বর্জ্য-আবর্জনা জমিয়ে রাখা হয় বা জমে থাকে সেসব ধুলাবালি, ময়লা, বর্জ্য-আবর্জনা সাত দিনের মধ্যে সিটি করপোরেশনকে অপসারণ করতে বলে উচ্চ আদালত।
তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরএইচআরপিবি’র আরেকটি সম্পূরক আবদন করে। সে আবেদনে ১২ নির্দেশনা চাওয়া হলেও হাই কোর্ট চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে আদেশ দেয়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি