২৭ ঘণ্টা বিদ্যুতবিহীন সিলেটবাসী

সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুনের ঘটনায় গত ২৭ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় রয়েছে সিলেট মহানগর ও এর আশপাশের এলাকা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট কুমারগাঁওয়ে ১৩২/৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। দমকল বাহিনীর সাতটি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও বুধবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বুধবার জানান, গতকাল রাত থেকে প্রায় ৪০০ কর্মী কাজ করছেন। আজ দুপুরের মধ্যে মেরামত করা কিছু পিলার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বিকালের দিকে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তবে বাকি এলাকায় কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না।
এদিকে কুমারগাঁওয়ে অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিরূপণে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে এ তদন্ত কমটি গঠন করা হয়।
কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে নির্বাহী পরিচালক (ওএন্ডএম) পিজিসিবি বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের উপমহাব্যবস্থাপক (এইচআরএম) রূপক মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ্ জায়েদী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
গ্রিডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন উপ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগুনে প্রায় ৭০ কোটি টাকার ২৫/৪১ এমবিএ দুটি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে। ট্রান্সফরমারগুলোর বাইরের অংশ পুড়লেও ভেতরে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া ৩৩ কেভি ফিডার ও বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন মহানগর এলাকার লোকজন। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও হাসপাতালে রোগীরাও পড়েছেন বিপাকে। সেই সাথে বিদ্যুৎ না থাকায় অফিস আদালতের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
টানা বিদ্যুতহীনতায় বেশি ভোগান্তিতে পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। বিদ্যুত না থাকায় দুপুর থেকেই বাসা-বাড়ি, মসজিদসহ নানা স্থানে পানিসহ নানা সংকট সৃষ্টি হয়। বিদ্যুতের অভাবে অনেক গৃহস্থালী কাজ ব্যাহত হয়। হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ জরুরি সেবা ব্যাহত হয়। অনেক ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকায় যানবাহন জ্বালানি সমস্যায় পড়েছে। বিশাল এলাকায় জনজীবনে মারাত্মক দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস