News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২০ অক্টোবর ২০২০
আপডেট: ০৭:০১, ২০ অক্টোবর ২০২০

মেঘনায় বিধবা নারীকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা, হত্যার হুমকি

মেঘনায় বিধবা নারীকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা, হত্যার হুমকি

মেঘনা উপজেলার বৈদ্যনাথপুর গ্রামে এক বিধবা নারীকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য নানামুখী অত্যাচার চালাচ্ছে তার ভাইয়ের ছেলে সন্ত্রাসী শাহাদাত। তাকে কয়েকবার হত্যার হুমকি দিয়েছে শাহাদাত ও তার বহু বিবাহিত মা। বিধবা রহিমা বেগম যাতে বাড়ি বিক্রি করে চলে যান সে জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর্যাপ্ত রাস্তা না রেখে পাকা ভবন তৈরি করছে শাহাদাত। ঐ সরু রাস্তার ওপর আবার ভবনের সিঁড়ি তৈরি করেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, বৈদ্যনাথপুর গ্রামের মরহুম কুদরত আলী মাস্টারের মেয়ে রহিমা বেগমের বিয়ে হয়েছিল ঢাকায়। তার স্বামী ২০/২৫ বছর আগে ছোট দুটি মেয়ে রেখে মারা যান। এর পর থেকে রহিমা বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন। এতিম দুই শিশু ও বিধবা মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বাবা কুদরত আলী মাস্টার তাকে বসতবাড়ি থেকে ১ শতাংশ জায়গা দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেন।

কুদরত আলী মাস্টার মারা যাওয়ার পর রহিমা বেগমের ওপর নানাভাবে নির্যাতন শুরু করেন তার ভাই কামালউদ্দিন। কামালের ছেলে শাহাদাতও ফুফুর ওপর অত্যাচার শুরু করেন। অত্যাচার করতে গিয়ে আপন দাদার হাত ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি। ওই মারপিটের পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধ কুদরত আলী মাস্টার। এর পর তিনি মারা যান।

মাস্টার মারা যাওয়ার পর রহিমা বেগমের ওপর কামাল ও তার ছেলে শাহাদাতের অত্যাচার বেড়ে যায়। আপন ছোটবোনকে নানা সময় মারপিটও করেন কামালউদ্দিন। এখন শাহতাদাতের অত্যাচার আরো বেড়ে গেছে।

স্বামীহারা রহিমা বেগম এতদিন ধরে বাবার তৈরি ঘরে বসবাস করে আসলেও সেটির মালিক তার বড় দুই ভাই মুক্তিযোদ্ধা আবুবকর ইঞ্জিনিয়ার ও রকিবউদ্দিন। কয়েক বছর আগে ঝড়ে ঘরটি ভেঙে পড়লে তিনি একই গ্রামে তার বড় মেয়ের জামাতার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। এর পর রহিমা বেগমের কিছু জমানো টাকা মিলিয়ে তার দুই জামাতা কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করেন। অর্থের অভাবে সেই কাজ একবছর ধরে অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি শাহাদাতও পাকা ভবন নির্মাণ শুরু করেন। কিন্তু তিনি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত রাস্তা রাখেননি।

এতে আপত্তি করলে শাহাদাত রহিমা বেগমকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলেন, “একটা খুন করলে কয় বছর জেল খাটে? দরকার হলে খুন করে পাঁচ বছর জেল খাটব।”

এর পরও শাহাদাতের সুবিধার কথা ভেবে রহিমা বেগম অপর্যাপ্ত রাস্তাই মেনে নেন। এরপর কয়েকদিন আগে সামান্য বিষয় নিয়ে শাহাদাত আবারও রহিমা বেগমকে হত্যার হুমকি দেন।

বিল্ডিং নির্মাণ শুরুর সময় শাহাদাত বলেছিলেন আড়াই ফুট রাস্তা রাখবেন। কিন্তু হুমকির মুখে আর প্রতিবাদ করতে পারেননি বা রাস্তা পরিমাপ করেননি রহিমা অথবা বড় মেয়ের জামাই একই গ্রামের শফিউদ্দিন মাস্টার। এখন দেখা যাচ্ছে রাস্তা দুই ফুটের বেশি নয়।

এছাড়া ঐ রাস্তার ওপর দিয়ে পাকা সিঁড়ি তৈরি করছেন শাহাদাত, যাতে চলাচল করতে গেলে মাথা ঠেকে যায়। এই সরু রাস্তা ও সিঁড়ির কারণে বাড়িতে কোনো মালামাল নিয়ে ঢোকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কেউ মারা গেলে লাশও বের করা যাবে না। এ অবস্থায় শাহাদাতের দুই চাচা তাকে সিঁড়ি ভাঙতে বললেও তিনি তা মানছেন না। এ সময় শাহাদাতের মা আবার হুমকি দিয়ে বলেন, “দরকার হলে আমার ছেলেকে দিয়ে খুন করাব। তবু সিঁড়ি সরাব না।”

শাহাদাতের স্ত্রী সামসুন্নাহারও রহিমা বেগমের ছোট মেয়ে তানিয়া আক্তারের ওপর হামলা হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

হত্যার হুমকি ও বাড়ি থেকে বেরুনোর রাস্তা না রাখার বিষয়টি রহিমা বেগমের ছোট জামাতা ঢাকায় বসবাসরত সাংবাদিক গোলাম আক্তার ফারুক মোবাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে থানায় এসে বিষয়টি বিস্তারিত অবহিত করতে বলেছেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়