News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৩৩, ২৭ মে ২০২৫
আপডেট: ২০:৩৩, ২৭ মে ২০২৫

মাথাপিছু আয় রেকর্ড ২৮২০ ডলার

মাথাপিছু আয় রেকর্ড ২৮২০ ডলার

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে—যা দেশের অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাময়িক হিসাব প্রকাশ করেছে মঙ্গলবার (২৭ মে), যেখানে এই তথ্য উঠে আসে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় এটি সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার, যা পরের বছর কিছুটা কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৪৯ ডলারে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এটি আরও কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৩৮ ডলারে। চলতি অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮২০ ডলার—অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৮২ ডলার।

ডলারের বিনিময় হারের পরিবর্তন মাথাপিছু আয়ের এই বৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতি ডলারের গড় বিনিময় হার ধরা হয়েছে ১২০ টাকা ২৯ পয়সা, যা গত অর্থবছরের ১১১ টাকা ৬ পয়সা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর ফলে টাকার অঙ্কে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২২১ টাকা, যা আগের বছরের ৩ লাখ ৪ হাজার ১০২ টাকার তুলনায় ৩৫ হাজারেরও বেশি বৃদ্ধি।

অনেকেই ভুল করে মাথাপিছু আয়কে ব্যক্তিগত আয় হিসেবে ধরে নেন। বাস্তবে এটি একটি গড় হিসাব, যা মোট জাতীয় আয়—অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও প্রবাসী আয় মিলিয়ে—দেশের মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়। তাই এই হিসাব ব্যক্তি বিশেষের আর্থিক অবস্থার সঠিক প্রতিফলন নয়। 

আরও পড়ুন: আ.লীগ আমলে পাচার ২০ বিলিয়ন ডলার: গভর্নর

যদিও মাথাপিছু আয়ের এই বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক শক্তিমত্তার পরিচয় দেয়, কিন্তু সব স্তরের মানুষের জীবনে এর প্রভাব সমানভাবে পড়ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি, আয় বৈষম্য এবং বাস্তব আয়ের দুর্বলতা অনেকের জীবনমান উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয় বৃদ্ধির এই পরিসংখ্যান সমাজের নিচের স্তরের মানুষের আর্থিক দুরবস্থা ঢাকতে পারছে না।

এই প্রেক্ষাপটে সরকার বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিম্নআয়ের মানুষ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ‘টার্গেটেড ক্যাশ ট্রান্সফার’, খাদ্য সহায়তা, নগদ ভর্তুকি এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে আয় বৈষম্য কমাতে একটি ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের কথাও ভাবছে সরকার।

অর্থনীতিবিদদের মতে, মাথাপিছু আয়ের এই ইতিবাচক অগ্রগতি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে। তবে এই উন্নয়ন যেন দীর্ঘস্থায়ী ও অংশগ্রহণমূলক হয়, সেজন্য আয়ের ভারসাম্য রক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করাকে এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।

সারাংশে, বাংলাদেশের অর্থনীতি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এগোচ্ছে, কিন্তু সেই অগ্রগতি সবার ঘরে পৌঁছাতে হলে প্রয়োজন কার্যকর নীতিমালা, ন্যায়সংগত বণ্টন, ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি। নতুন মাইলফলক উদযাপনের পাশাপাশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণই হতে পারে উন্নয়নের পরবর্তী ধাপ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়