আ.লীগ আমলে পাচার ২০ বিলিয়ন ডলার: গভর্নর

ফাইল ছবি
পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা এক কঠিন চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, বিগত সরকার আমলে বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, যা ফেরত আনা দেশের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে ইতোমধ্যে বিদেশে থাকা কিছু সম্পদ জব্দ করা সম্ভব হয়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরত আনতে বর্তমান আইনি কাঠামো যথেষ্ট নয়। সরকার ইতোমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ে উদ্যোগ নিয়েছে, আইন সংশোধন এবং টাস্কফোর্সের ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। পুরো প্রক্রিয়ায় ৩ থেকে ৫ বছর সময় লাগতে পারে।
গভর্নর জানান, পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক অতীতে কখনও এ ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়নি। ফলে প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলেও এটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে।
আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীদের ১৯৭১-এ বুদ্ধিজীবীদের মতো হত্যা করা হচ্ছে: শওকত আজিজ
ব্যাংক খাত পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, কিছু ব্যাংকের একীভূতকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মার্জার (একীভূতকরণ) এখন অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এসব ব্যাংকে সরকারের পক্ষ থেকে মূলধন ঢালা হবে, যাতে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা পায়।
ব্যবসায়ী সমাজের আশঙ্কা দূর করে গভর্নর স্পষ্ট করে বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবসায়িক হিসাব জব্দ করা হয়নি, এবং ভবিষ্যতেও এমন পরিকল্পনা নেই। ব্যবসায়িক কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয়, সে দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। শুধু ব্যক্তিগত হিসাব জব্দ হয়েছে যেখানে পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি। এ সময় বিএফআইইউ ১১৪টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠায় এবং ১,২২০টি তথ্য বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনা করে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি।
অর্থ পাচার রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং গোয়েন্দা সংস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে বলেও জানান গভর্নর।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি