সরকারি নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে দুর্বল ৬ ব্যাংক

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে, ছয়টি দুর্বল বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

একীভূত হওয়া ছয়টি ব্যাংক হলো সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড।

এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে পাঁচটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং একটি নজরুল ইসলাম মজুমদারের অধীনে পরিচালিত হতো। 

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এসব ব্যাংকের আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনা সম্পন্ন করেছে। 

গভর্নর মনসুর জানিয়েছেন, সরকার প্রাথমিকভাবে এসব ব্যাংকের মালিকানা গ্রহণ করবে এবং প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহ করে ব্যাংকগুলোর ভিত্তি শক্ত করা হবে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে, বিদেশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা হবে। 

আরও পড়ুন: এখনও ঈদ বোনাস পাননি ১,২৭৮ কারখানার কর্মীরা

এই পদক্ষেপের জন্য সরকার সম্প্রতি “ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ ২০২৫” জারি করেছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংককে যে কোনো তফসিলি ব্যাংকের মালিকানা অস্থায়ীভাবে গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করে। এই অধ্যাদেশের আওতায়, সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় হলে ব্যাংক শেয়ারের হস্তান্তরের আদেশ জারি করতে পারে। 

গভর্নর মনসুর আরও জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (Capital Adequacy Ratio) আগামী চার বছরের মধ্যে ১২.৫ থেকে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, ব্যাংকগুলোর শেয়ার ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার যদি সময়মতো এই পুনর্গঠনের পদক্ষেপ না নিত, তাহলে পুরো ব্যাংকিং খাতেই আস্থার সংকট তৈরি হতে পারতো। তবে সরকারি হস্তক্ষেপে ব্যাংকগুলো সময়ের সঙ্গে পুনরুদ্ধার করবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন তারা।

এই উদ্যোগ ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনঃস্থাপনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।