News Bangladesh

চাঁদপুর সংবাদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:১২, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
আপডেট: ১৬:৪১, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

মিষ্টি কুমড়া চাষে কৃষকের মাথায় হাত

মিষ্টি কুমড়া চাষে কৃষকের মাথায় হাত

ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া বিক্রি না হওয়ায় এখন গোখাদ্যে রূপ নিয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, লাভ তো দূরের কথা, পরিশ্রম আর চাষের খরচ তোলা যায় কিনা সেই দুশ্চিন্তায় এখন মাথা খারাপ হবার অবস্থা হয়েছে তাদের ।

সদর ও হাজীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে, চাঁদপুর সদর উপজেলা, হাজীগঞ্জ, মতলব দক্ষিণ ও উত্তরসহ কয়েকটি উপজেলায় গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে এবার মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। ফলে চাহিদার অতিরিক্ত কুমড়া বিক্রি করতে পারছেন না কৃষক।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার আশিকাটি, চানখার দোকান ও দেবপুরে অবিক্রিত কুমড়া এখন গোখাদ্য হিসেবে বিক্রির চেষ্টা করছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, অন্যান্য বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মিষ্টি কুমড়া কিনতে পাইকাররা আসতেন। ট্রাক ও পিকআপ ভর্তি করে তারা নিয়ে যেতেন মিষ্টি কুমড়া। এতে চাষীদের সব কুমড়া যেমন বিক্রি হয়ে যেত, তেমনি ভালো দাম পাওয়ায় বেশ লাভও হতো। কিন্তু এবার তেমনভাবে পাইকারদের দেখা নেই। ফলে জমিতেই পাকতে শুরু করেছে কুমড়া। এমতাবস্থায় ক্ষতি এড়াতে এসব কুমড়া স্থানীয় হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রির পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

আরও পড়ুন: পানির অভাবে চরম দুর্দশায় হাইমচরের কৃষক

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কুমড়ার কমবেশি আবাদ হলেও সদর ও হাজীগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী তীরবর্তী এলাকার পলিবিধৌত আশিকাটি, সেনগাঁও, ঘোষেরহাট, শাহমাহমুদপুর, দেবপুর, মহামায়া, বিমলের গাঁও, বাকিলা, সাদ্রা, অলিপুর, শ্রীনারায়ণপুর প্রভৃতি গ্রামে ব্যাপক আকারে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছে।

পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ধনে পাতা, লাউ ও শসার আবাদও হয়েছে প্রচুর পরিমাণে। সেইসঙ্গে এবার বেড়েছে ফলন। তাই চাহিদার তুলনায় যোগান বেড়ে যাওয়ায় শুরু থেকেই শাক-সবজির দাম কম পাচ্ছেন চাষীরা।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, মৌসুমি নিরাপদ শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করা হয়। এ অঞ্চলের মাটি অপেক্ষাকৃত বেশি উর্বর। তাই শাক-সবজি চাষে সময়, শ্রম ও খরচ কম হওয়ায় প্রতি বছরই চাষের পরিমাণ বাড়ছে।

এ বছর শুধু হাজীগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৬১৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে বলে জানান দিলরুবা খানম।

তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয় ২৮৬ হেক্টর জমিতে। সেই তুলনায় এ বছর কুমড়ার আবাদ হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তার ওপর পাইকার, ছোট ক্রেতা ও ব্যবসায়ী না থাকায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষকদের এসব কুমড়া বিভিন্ন বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করার পরামর্শ দিচ্ছি। এতে লাভ অল্প হলেও কুমড়াগুলো অন্তত বিক্রি হয়ে যাবে।’

উপজেলার কৃষকদের মুখেও একই কথা, চলতি মৌসুমে বলাখাল, অলিপুর, সাদ্রা, শ্রীনারায়ণপুর গ্রামে ব্যাপক আকারে কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। তবে এসব কুমড়া বিক্রির শেষ সময় চললেও বাজরে তেমন চাহিদা নেই।

তাদের দাবি, প্রতি বছরের এই সময়ে খেতের প্রায় ৯৫ শতাংশ কুমড়া বিক্রি হয়ে যায়। অথচ, এবার অর্ধেকও বিক্রি করতে পারেননি অনেক কৃষক। ফলে বিপাকে পড়েছেন তারা। কোনোমতে খরচ তুলতে তাই গরুর খাদ্য হিসেবে এসব কুমড়া বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেকে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়