News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫

পানির অভাবে চরম দুর্দশায় হাইমচরের কৃষক

পানির অভাবে চরম দুর্দশায় হাইমচরের কৃষক

ছবি: সংগৃহীত

পানি সংকটের কারণে চরম দুর্দশায় পড়েছেন চাঁদপুর জেলার হাইমচরের কৃষক। জমি প্রস্তুত করেও পানি সংকটে বোরোধান রোপণ করতে পারছেন না তারা। আর এভাবে চলতে থাকলে, বীজতলায় ধানের চারা বেশি দিন রাখলে ভালো উৎপাদন না হওয়ার আশঙ্কায় চাষিরা। 

উপজেলার বিভিন্ন খাল শুকিয়ে যাওয়ায় ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। পানির অভাবে কৃষকদের রোপণ করা ফসল নষ্ট হচ্ছে। বোরো মৌসুমে সঠিক সময়ে পানি না পেলে আরও বড় ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। ফলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) হাইমচরে চরভাঙ্গা, গন্ডামারা, কমলাপুর, ছোট লক্ষীপুরসহ মেঘনা নদীর পূর্ব অঞ্চলের কৃষকরা এ হতাশার কথা জানান।

দেখা যায়, কৃষকরা জমি প্রস্তুত করেও পানি সংকটে বোরোধান রোপণ করতে পারছে না। তাই বীজতলায় ধানের চারা বেশি দিন রাখা ঠেকাতে ভালো উৎপাদনের আশায় দ্রুত পানির প্রয়োজন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

জানা যায়, হাইমচরে খাল সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা আসলে পানি প্রতিবন্ধকতায় ফসলের জমিসহ বাড়ি ঘর পানিতেলে ডুবে যায়। গেলো বর্ষাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এখানকার সাধারণকৃষকরা। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড হাইমচরে দুটি খাল বিপি-৫, ডব্লিউ আই সি পুনর্খননের কাজ শুরু করে।

চরভাঙ্গার মহসিন, নাইমুল, ফারুকসহ আরো অনেকে বলেন, জমি প্রস্তুত করেও পানির অভাবে বোরোধান রোপণ করতে পারছি না। বীজতলার সময় বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ধান চাষে উৎপাদন কমে যাবে। বহুদিন ধরে খাল পুনঃখনন করার কাজ চলমান রয়েছে। কবে তা শেষ হবে আর খালে পানি আসবে তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। বর্ষায় পানি বেশি থাকায় কোন ফসল আমরা উৎপাদন করতে পারিনি। এখন ঠিক মতো পানি না পেলে এবারও ফসল ফলাতে না পারলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে।

তারা আরও বলেন, দুয়েকজন কৃষক পুকুর, ডোবা থেকে পানি দিয়ে চাষাবাদ শুরু করলেও এখনো পরিপূর্ণ পানি না থাকায় সব শুকিয়ে মাঠ ফেটে ধানের চারাগাছ জ্বলে যাচ্ছে। 

আরও পড়ুন: ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ সিলেটের শিম চাষিরা

হাইমচর উপজেলার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, আমরা দুটি খাল পুনর্খননের কাজ করছি। এরমধ্যে উত্তরে বি পি-৫, কমলাপুর থেকে মহজমপুর ব্রিজ পর্যন্ত ৩ কি.মি. ১৮৫ মিটার। দক্ষিণে ডব্লিউ আই সি টেক কান্দি থেকে সাবু মাস্টারের মোড় পর্যন্ত ২ কি.মি. ৫০ মিটার। খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশা করছি অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই খাল পুনর্খনন সম্পন্ন করে পানি সরবরাহ করতে পারব।

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার বলেন, প্রতিবছর বোরো মৌসুমে ধান চাষ করতে পানির প্রয়োজন হয়। আমরা ইতোমধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পানি সরবরাহ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড খাল পুনর্সংস্কার কাজ করায় পানি সরবরাহে বিলম্ব হচ্ছে।

তিনি বলেন, বোরোধান চাষিরা যদি সময় মতো পানি না পায় তাহলে ধান চাষে অনেকটা বিঘ্নতা হবে। তাই আমরা বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। দ্রুত যেন পানি সরবরাহ করা হয়। হাইমচরে বোরোধান চাষ করা হয় ৬৯০ হেক্টর জমিতে।

ফসল ঠিক মতো ঘরে তোলা গেলে ২৯৭৮ মে. টন ধান উৎপাদন হবে। ইতোমধ্যেই ১৬০০ জন কৃষককে ৫ কেজি ধান বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ১০ কেজি এমওপি সার দিয়েছি। এখানে ৪২০০ জন কৃষক বোরো ধান চাষের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়