শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে বাজেট

ফাইল ছবি
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ হ্রাসের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি আন্দোলন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক মাহমুদ সেলিম ও সদস্য সচিব রুস্তম আলী খোকন বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের ঘোষিত বাজেটে শিক্ষাখাতে ব্যয় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া “দুঃখজনক, অনাঙ্ক্ষিত এবং ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক”।
বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার মূলত ছাত্র জনতার আন্দোলনের ফসল হলেও, সেই সরকারের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ব্যয় হ্রাস পূর্ববর্তী সরকারের তুলনায় আরও হতাশাজনক। বিশেষ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় হ্রাস করা হয়েছে — যা নেতৃবৃন্দের ভাষায় “আশঙ্কাজনক”।
অপরদিকে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হলেও দেশে পর্যাপ্ত কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র না থাকায় ওই অর্থ মাদ্রাসা শিক্ষায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, এ ধরনের খরচ কাঠামো চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক গঠনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।
আরও পড়ুন: এমপিওভুক্ত হচ্ছে আরও ১৫০০ মাদরাসা
জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি আন্দোলন বলছে, ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী বাংলাদেশের উচিত জাতীয় আয়ের অন্তত ৬ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করা। কিন্তু অতীতের মতো এবারও সরকার সে নির্দেশনা মানেনি।
সংগঠনটির দাবি, এ নিয়ে বাজেট বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
নেতারা অভিযোগ করেন, সরকার বাজেটের বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত বিভাজন করে শিক্ষা খাতে বরাদ্দকে বড় করে উপস্থাপনের কৌশল নিয়েছে। ফলে, বাস্তবে বরাদ্দ কমে গেলেও তা শতাংশের হিসাবে বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, বিগত অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল ১১ শতাংশ, যেখানে টাকার অঙ্ক ছিল বেশি। অথচ এবার বরাদ্দের টাকার অঙ্ক কম হলেও তা ১৪ শতাংশ বলে দাবি করছে সরকার।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, শিক্ষা খাতে জাতীয় আয়ের মাত্র ১.৭৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা এ খাতের প্রতি সরকারের অবহেলার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
শিক্ষা খাতে অবিলম্বে ইউনেস্কোর মানদণ্ড অনুযায়ী বরাদ্দ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, একটি দক্ষ, মানবিক, বিজ্ঞানমনস্ক ও দেশপ্রেমিক জাতি গঠনের লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি