লন্ডন সফর নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চলছে: রিজভী

ছবি: সংগৃহীত
লন্ডনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন বৈঠককে ঘিরে দেশে যেমন উচ্চ আগ্রহ তৈরি হয়েছে, তেমনি চলছে ব্যাপক প্রচার ও পাল্টা প্রচার।
এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বৈঠককে “অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ” হিসেবে আখ্যা দেন এবং একে ঘিরে চলা “অপপ্রচারের” বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রিজভী বলেন, এই বৈঠকটি আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন-সংস্কার এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে এক গঠনমূলক মাইলফলক হয়ে উঠবে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের আবর্তে জনগণের অধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেভাবে পদদলিত হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক এক গভীর কৌশলগত গুরুত্ব বহন করছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একাধিক এমপির বৈঠক প্রমাণ করে এটি কোনো ব্যক্তিগত সফর নয়, বরং একটি কূটনৈতিক ও নীতিগত গুরুত্বপূর্ণ সফর।
রিজভী অভিযোগ করেন, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠককে কেন্দ্র করে যে অপপ্রচার চলছে, তা মূলত আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতি, লুটপাট ও বিদেশে অর্থপাচারের বিষয় আড়াল করতেই চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ূন: মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে চীন যাচ্ছে বিএনপির প্রতিনিধিদল
বিশেষভাবে তিনি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর লন্ডনে অবস্থিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, কিন্তু সেই বিষয়ে অপপ্রচারকারীরা মুখ খোলেনি। এই নীরবতা ইঙ্গিত দেয় যে আসল অপরাধীরা কোথায় অবস্থান করছে।
রিজভী বলেন, সমগ্র দেশবাসী জানতে চায়—ইউনূস-তারেক বৈঠকে কী আলোচনা হবে, ভবিষ্যতের নির্বাচন কবে হবে, এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারে কোন দিকনির্দেশনা আসবে। এই বৈঠককে ঘিরে মানুষের মধ্যে একটা উচ্চ প্রত্যাশা কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার ষোলো আনা কর্তৃত্বের ছায়ায় আমরা আজ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য খড়কুটো কুড়াচ্ছি। স্বাধীন মতপ্রকাশ, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সমাবেশের অধিকার ফিরে পেতে হলে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের রূপরেখা আজ সময়ের দাবি।
রিজভী বলেন, আমরা আশা করি আগামীকাল (১৩ জুন) লন্ডনের স্থানীয় একটি হোটেলে শুরু হতে যাওয়া বৈঠকটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক উত্তরণ ও টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ফলপ্রসূ হবে। এই সংলাপ কেবল একটি কৌশলগত বৈঠক নয়, বরং এটি জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যত চিত্র নির্ধারণে এক গুরুত্বপূর্ণ পর্ব।
তিনি বলেন, আগামী ৫ আগস্টের পর যে রাজনৈতিক রূপরেখা সামনে আসবে, সেখানে আমাদের প্রধান অঙ্গীকার থাকবে—গণতন্ত্রের স্থায়ী রূপদান, মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি