News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:০১, ২৭ মে ২০২৫

সাম্য হত্যার তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য: ডিএমপি

সাম্য হত্যার তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য: ডিএমপি

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

ডিএমপি জানায়, গত ১৩ মে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন সাম্য। ঘটনার রাতেই শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন রাতে সাম্য তার দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। সেখানে খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্যে ফুডকোর্টে যান তারা। এসময় উদ্যানের চিহ্নিত মাদক কারবারিদের হাতে থাকা ট্রেজার গান (ইলেকট্রিক শক দেওয়ার মেশিন) দেখতে চান সাম্য। বিষয়টি ঘিরে তার সঙ্গে মাদক কারবারিদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় মাদকচক্রের অন্য সদস্যরা। এই ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে রাব্বী নামের এক মাদক ব্যবসায়ী সুইস গিয়ার ছুরি দিয়ে সাম্যকে আঘাত করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্য ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। 

আরও পড়ুন: শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদসহ গ্রেফতার ৪

তদন্তে উঠে এসেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সক্রিয় তিনটি মাদক চক্র রয়েছে। তিন নেতার মাজার, মাঝের অংশ এবং ছবির হাট এলাকায় বিভক্তভাবে তারা ব্যবসা চালায়। নিহতের ঘটনায় দায়ী গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন মেহেদী নামে এক যুবক, যিনি ঘটনার দিন কালো ব্যাগে করে সুইস গিয়ার ছুরি সরবরাহ করেন।

ডিবি আরও জানায়, মেহেদী ওই এলাকায় সুইস গিয়ার সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিত এবং তার নেতৃত্বাধীন দল হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করে।

ঘটনার পর কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন করে আটজনকে গ্রেফতার করে ডিবি। এর আগে গ্রেফতার করা তিনজনসহ এ ঘটনায় মোট ১১ জনকে আটক করা হয়েছে।

রাব্বী ওরফে কবুতর রাব্বী (২৫), মেহেদী হাসান (২৫), নাহিদ হাসান পাপেল (২১), মো. রিপন (২০), মো. সোহাগ (৩৩), মো. রবিন (১৮), মো. হৃদয় ইসলাম (২৪) ও সুজন সরকার (২৭)।
এছাড়া, ঘটনার রাতে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে আটক হন তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও পলাশ সরদার (৩০)।

মেহেদীর দেখানো মতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিন নেতার মাজারের কাছে মাটিচাপা দিয়ে রাখা অবস্থায় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি সুইস গিয়ার ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান ডিএমপি।

ডিএমপি কমিশনার জানান, এখনো তদন্ত চলমান রয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডটি তাৎক্ষণিক ঘটেছে বলে আপাতত মনে হলেও এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মূল আসামিদের রিমান্ডে এনে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যার পেছনের মোটিভ বের করার চেষ্টা চলছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়