মাতারবাড়ীকে রপ্তানিমুখী অঞ্চল গড়ার নির্দেশ

ফাইল ছবি
উপকূলীয় মাতারবাড়ী অঞ্চলকে দেশের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে রূপান্তর করতে দ্রুত অবকাঠামো উন্নয়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (এমআইডিআই) বিষয়ক এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন তিনি।
বৈঠকে মাতারবাড়ীর কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা মাতারবাড়ীকে দেশের বৃহত্তম বন্দর, সরবরাহ, উৎপাদন এবং জ্বালানির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছি। এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে এবং একটি সুসংগঠিত মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন জরুরি।
প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট সচিবদের মহেশখালী-মাতারবাড়ী অঞ্চলের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের যোগাযোগ সহজ করতে দ্রুত সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি বৃহৎ সমুদ্রগামী কন্টেইনার জাহাজের জন্য টার্মিনাল স্থাপনের ওপর জোর দেন।
এছাড়া, শ্রমিকদের বসবাসের সুবিধার্থে একটি পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলার পাশাপাশি নগর উন্নয়ন পরিকল্পনাও গ্রহণের কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, ২৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া তাঁর আড়াই দিনের জাপান সফরে এমআইডিআই অঞ্চলের উন্নয়ন হবে একটি প্রধান এজেন্ডা। সফরে তিনি ৩০ মে টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য ৩০তম নিক্কেই ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন। আলোচনায় এমআইডিআই প্রকল্পে বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি সংশোধনী নিয়ে তিন সচিবের সঙ্গে বৈঠক
বৈঠকে জানানো হয়, জাপান মহেশখালী-মাতারবাড়ী অঞ্চলে তাদের দ্বিতীয় একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর আগে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে প্রথম জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানিও এই অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের আরামকো, আবুধাবি পোর্টস, রেড সি গেটওয়ে, জাপানি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী জেরা এবং মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস।
সম্প্রতি, মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জাপানের পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও টিওএ কর্পোরেশনের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এ প্রকল্পে সহায়তা করছে। এটি এমআইডিআই উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দু এবং মাতারবাড়ীর সংযোগ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বহুগুণে বাড়াবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ, সড়ক পরিবহন, নৌপরিবহন, জ্বালানি, বিদ্যুৎ এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এমআইডিআই সেলের মহাপরিচালক সারওয়ার আলম চলমান প্রকল্পগুলোর একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি