News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ২৫ জুন ২০২৫
আপডেট: ১৬:০৬, ২৫ জুন ২০২৫

মার্কিন হামলায় ইরানের পরমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়নি : পেন্টাগন

মার্কিন হামলায় ইরানের পরমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়নি : পেন্টাগন

স্যাটেলাইট ছবিতে ইরানের ইসফাহান পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। ছবি: এএফপি

সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় চালানো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা  ধ্বংস করেনি। পেন্টাগনের গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রাথমিক গোপন প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে। দুইজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়,  এই প্রাথমিক মূল্যায়নটি প্রস্তুত করেছে ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ)। এতে বলা হয়েছে, ইরানের মূল পরমাণু কর্মসূচির যন্ত্রপাতি — বিশেষ করে সেন্ট্রিফিউজগুলো — সংস্কার ও পুনরায় চালুর উপযোগী এবং কয়েক মাসের মধ্যেই তা আবার চালু হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের ৪০০ কেজির বেশি ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত হামলার আগে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তা গোপন স্থাপনায় স্থানান্তর করা হয়ে থাকতে পারে।

যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টেলিভিশন ভাষণে দাবি করেন, ইরানের নাতানজ, ফর্ডো এবং ইসফাহান-এর পরমাণু স্থাপনাগুলো “সম্পূর্ণ ধ্বংস” হয়েছে, ডিআইএর প্রাথমিক মূল্যায়ন তা বিরোধিতা করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের ফর্ডো স্থাপনাটি জাগরোস পর্বতমালার নিচে অবস্থিত, যা ৪৫-৯০ মিটার গভীর পাথরের স্তরের নিচে নির্মিত। এই স্থাপনাকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে সাধারণ বোমা যথেষ্ট নয় বলে জানায় পেন্টাগনের একটি অভ্যন্তরীণ ব্রিফিং, যেখানে বলা হয়, কেবল কৌশলগত পারমাণবিক বোমা দিয়েই ফর্ডো সম্পূর্ণ ধ্বংস করা সম্ভব।

এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র বি-২ স্টেলথ বোমারু থেকে ১২টি জিবিইউ-৫৭ “বাঙ্কার বাস্টার” বোমা ফর্ডোতে এবং ২টি নাতানজে ফেলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাবমেরিন থেকে প্রায় ৩০টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ইসফাহানে ছোড়া হয়।

তবে পেন্টাগনের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান ড্যান কেইন স্বীকার করেছেন, এই হামলায় তিনটি পরমাণু স্থাপনায় গুরুতর ক্ষতি হয়েছে বটে, তবে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন এখনও বাকি।

আরও পড়ুন: সাত শতাধিক ‘ইসরায়েলি গুপ্তচর’ গ্রেফতারের দাবি ইরানের

ট্রাম্প এর বিপরীতে, নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দাবি করেন, “ইরানের পারমাণবিক সাইট সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে!” – যদিও এই দাবি ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রকৃত চিত্রের চেয়ে অতিরঞ্জিত।

হোয়াইট হাউস সিএনএনের রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, “এই প্রতিবেদন ফাঁস করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হেয় করার চেষ্টা চলছে”।

এদিকে আইএইএ-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেন, তারা ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুতের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত নন। বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই হামলা যদি প্রকৃতপক্ষে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়ে থাকে, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়