ভারতে নতুন রূপে ফিরল করোনা, চারদিনে আক্রান্ত ১৭০০

ফাইল ছবি
ভারতে আবারও ভয়ংকর রূপে ফিরে এসেছে করোনাভাইরাস। মাত্র চারদিনেই দেশটিতে ১ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি শনাক্ত হয়েছে করোনার চারটি নতুন ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট।
যদিও ভারতীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন সংক্রমণগুলো হালকা প্রকৃতির এবং এতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৬ মে পর্যন্ত দেশটিতে সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১০ জন। অথচ ৩০ মে পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১০-এ। অর্থাৎ মাত্র চারদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭০০ জন।
রাজ্যভিত্তিক সংক্রমণের হিসাবে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা কেরালা রাজ্যে। ৩০ মে পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৩৬ জন। এরপরের অবস্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র (৪৬৭ জন), দিল্লি (৩৭৫ জন), গুজরাট (২৬৫ জন), কর্ণাটক (২৩৪ জন), তামিলনাড়ু (১৮৫ জন), পশ্চিমবঙ্গ (২০৫ জন) ও উত্তরপ্রদেশ (১১৭ জন)।
এ ছাড়া সংক্রমণ ছড়িয়েছে রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর ও পুদুচেরিতেও।
চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর বরাত দিয়ে জানা গেছে, ভারতে বর্তমানে চারটি নতুন ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এগুলো হলো:
- JN.1 – বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ছড়াচ্ছে।
- NB.1.8.1 – যা প্রথম শনাক্ত হয় চীনে, পরে ভারতে ছড়ায়।
- LF.7 – গুজরাটে কয়েকটি কেস শনাক্ত হয়েছে।
- XFG – নতুন ও অল্প-পর্যবেক্ষণে থাকা ভ্যারিয়েন্ট।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যে NB.1.8.1 ও LF.7-কে ‘Variants Under Monitoring’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: জঙ্গি হামলায় কাঁপছে কোয়েটা
সরকারি তথ্যমতে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে করোনায় অন্তত সাতজন মারা গেছেন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র ও দিল্লির দুজনের শরীরে করোনার পাশাপাশি অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতা ছিল।
তবে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (ICMR)-এর মহাপরিচালক ড. রাজীব বাহল জানান, এই সংক্রমণগুলো হালকা প্রকৃতির। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে শুধু সতর্ক থাকতে হবে। সরকার এবং সংস্থাগুলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নাগরিকদের নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে:
- জনসমাগমে মাস্ক পরিধান
- নিয়মিত হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহার
- শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা
- উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা ও চিকিৎসা
করোনাভাইরাস নতুনভাবে ফিরে আসছে ঠিকই, তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এখনই বড় বিপদের কারণ নয়। তবুও, জনগণের মধ্যে সচেতনতা ও প্রাথমিক সতর্কতাই পারে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি