News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ১ জুন ২০২৫

জঙ্গি হামলায় কাঁপছে কোয়েটা

জঙ্গি হামলায় কাঁপছে কোয়েটা

ফাইল ছবি

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক জঙ্গি হামলায় নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। 

সর্বশেষ, শনিবার (৩১ মে) কোয়েটা শহরের উপকণ্ঠে নওয়ান কিল্লি এলাকায় এক বিস্ফোরণে অন্তত দুইজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।

বিস্ফোরণের প্রকৃতি এখনো নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত না হলেও, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পুনরাগমনের পর থেকে পাকিস্তানে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে, জঙ্গি হামলার ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হামলাগুলোর বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে।

পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (PICS)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দেশজুড়ে ৭৪টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে—যা ডিসেম্বর ২০২৪-এর তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি। ওইসব হামলায় মোট ৯১ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৩৫ জন ছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ২০ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ৩৬ জন হামলাকারী। আহত হন ১১৭ জন। 

আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় আকস্মিক বন্যায় নিহত ১৫১

বিস্ফোরণের একদিন আগেই বেলুচিস্তানের খুজদার জেলার সোরাব শহরে অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (ADC) হিদায়ত বুলেদি নিহত হন এক সশস্ত্র হামলায়। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানিয়েছেন, ‘ফিতনা আল-হিন্দুস্তান’ নামের একটি জঙ্গি সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

একইদিন, বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA) সোরাব বাজারে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ডাকাতি এবং একাধিক সরকারি বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি ফ্রন্টিয়ার কর্পস (FC) ও লেভিস বাহিনী যৌথ অভিযান শুরু করে।

২১ মে খুজদার জেলার জিরো পয়েন্ট এলাকায় একটি স্কুলবাসে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় পাঁচ শিক্ষার্থীসহ অন্তত আটজন নিহত হন। বাসটিতে ৪০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ছিল, যারা স্কুলে যাচ্ছিল। এ ঘটনায় দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে।

বেলুচিস্তান দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ক্ষতবিক্ষত একটি অঞ্চল। এ অঞ্চলে পুষ্ট হয়ে ওঠা চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো নিয়মিতভাবেই নিরাপত্তা বাহিনী, সরকারি স্থাপনা ও বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সীমান্তপারের নিরাপত্তা শূন্যতা, দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য এই সহিংসতার পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়