মিস ওয়ার্ল্ড ২০২৫: সৌন্দর্যের শীর্ষে ওপাল সুচাতা

আন্তর্জাতিক মঞ্চে সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে বিশ্বের ৭২তম মিস ওয়ার্ল্ড নির্বাচিত হয়েছেন থাইল্যান্ডের ওপাল সুচাতা চুয়াংস্রি। 

ভারতের হায়দরাবাদের তেলেঙ্গানার হাইটেক্স এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত এই গ্ল্যামারাস প্রতিযোগিতায় তিনি ছাড়িয়ে গেছেন ১০৮ দেশের প্রতিনিধিকে।

থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের ফুকেতে বেড়ে ওঠা ওপাল শুধু রূপেই নয়, মানবিক দায়িত্ববোধ এবং সামাজিক উদ্যোগেও ছিলেন অনন্য। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি মডেলিং জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। তবে তার জীবনের মোড় ঘুরে যায় মাত্র ১৬ বছর বয়সে, যখন নিজের স্তনে একটি 'লাম্প' ধরা পড়ে। সেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই তাকে ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।

‘Opal for Her’ নামের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বাড়াতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তার এই মানবিক প্রচেষ্টা এবং দৃঢ় বক্তব্য বিচারকদের মন জয় করে নেয়। গ্র্যান্ড ফিনালের শেষ প্রশ্নোত্তরে আত্মবিশ্বাস ও উপলব্ধির গভীরতা দেখিয়ে তিনি অন্যদের ছাপিয়ে যান। 

আরও পড়ুন: আনন্দমেলায় সাবিনা ইয়াসমিনের গান, মঞ্চ মাতাবেন সাকিব খান

চূড়ান্ত ফলাফল:

• মিস ওয়ার্ল্ড ২০২৫: ওপাল সুচাতা চুয়াংস্রি (থাইল্যান্ড)
• রানার আপ: হাসেট দেরেজে আদমাসু (ইথিওপিয়া)
• তৃতীয় স্থান: মাজা ক্লাজদা (পোল্যান্ড)
• চতুর্থ স্থান: অরেলি জোয়াচিম (মার্টিনিক)

প্রতিযোগিতার শুরু হয় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। প্রতিযোগীরা নিজেদের সংস্কৃতি ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড উপস্থাপন করেন। এরপর একাধিক রাউন্ড— ট্যালেন্ট, বিউটি উইথ এ পারপাস, মাল্টিমিডিয়া ও টপ মডেল— এর মাধ্যমে বাছাই হয় সেরা ১০। সেখান থেকে ধাপে ধাপে উঠে আসে চূড়ান্ত চারজন।

উল্লেখযোগ্য যে, ওপাল ২০২৪ সালে ‘মিস ইউনিভার্স ইন্টারন্যাশনাল’ প্রতিযোগিতায় থার্ড রানার আপ হয়েছিলেন। পরবর্তীতে মিস ইউনিভার্স থাইল্যান্ডের মুকুট ছাড়তে হয় তাকে, কারণ তিনি ‘মিস ওয়ার্ল্ড থাইল্যান্ড ২০২৫’ খেতাব অর্জন করেন। সেখান থেকেই শুরু হয় তার বিশ্ব মঞ্চে নতুন যাত্রা।

এবারের আসরে ভারতের নন্দিনী গুপ্তা শীর্ষ আটেও পৌঁছাতে পারেননি, যা আয়োজক দেশের জন্য কিছুটা হতাশার খবর বয়ে আনে।

মিস ওয়ার্ল্ড শুধু একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি নারীশক্তি, মানবিকতা ও নেতৃত্বের প্রতীক। ওপাল সুচাতা সেই বার্তাকেই আলোকিত করে তুলেছেন। তার জীবন, তার লক্ষ্য এবং তার সেবা মূলক কাজ বিশ্বকে দেখিয়েছে— সত্যিকারের সৌন্দর্য আসে হৃদয় ও মানসিক শক্তি থেকে।