ব্লু ফিল্ম র্যাকেটের অন্ধকারে ‘নীলচক্র’, এক সাহসী বাংলা থ্রিলার

ছবি: সংগৃহীত
প্রযুক্তি যখন পরিণত হয় অস্ত্র হিসেবে, তখন একটি ভিডিওই হয়ে উঠতে পারে জীবনের নিয়তির নিয়ন্ত্রক। এই ভয়াবহ বাস্তবতাকেই কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে এবারের ঈদে মুক্তি পাওয়া আরিফিন শুভ অভিনীত সাসপেন্স থ্রিলার ‘নীলচক্র’, যা ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ২২ মে প্রকাশিত হয়েছে সিনেমাটির ট্রেলার। ২ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের এই ট্রেলারে ফুটে উঠেছে এক ভয়ানক অনৈতিক চক্রের অস্তিত্ব—যেখানে শহরের অলিগলিতে একের পর এক ব্যক্তিগত ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে। প্রথমে নিছক গুজব মনে হলেও, অল্প সময়েই তা রূপ নেয় জনমনে গভীর আতঙ্কে। একটি অদৃশ্য র্যাকেট ভিডিও ফাঁসের মাধ্যমে শুধু ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকেই আঘাত করছে না, বরং কাঁপিয়ে দিচ্ছে গোটা সমাজের মূল্যবোধ ও নিরাপত্তাবোধ।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পেছনে কারা? কারা এই ‘নীলচক্র’ নামের অন্ধকার নেটওয়ার্কের চালক? মুখোশ উন্মোচনের অভিযানে নামেন একজন ব্যক্তি, যার চরিত্রে দেখা যাবে জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভকে।
পরিচালক মিঠু খান বলেন, এই গল্প আমাদের সমাজের এক অস্বীকার্য বাস্তবতা—যা দিনের আলোয় আসে না, বরং ছায়া থেকে আঘাত হানে।
তিনি জানান, বাংলা চলচ্চিত্রে ব্লু ফিল্ম র্যাকেট নিয়ে এত বাস্তব ও সংবেদনশীলভাবে এর আগে কখনো গল্প বলা হয়নি। চিত্রনাট্যে মিঠুর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নাজিম উদ দৌলা। প্রযোজনা করেছে ফিল্ম ফায়োস প্রডাকশন, নিবেদন ফিল্ম লাইফ প্রডাকশন।
আরও পড়ুন: শাকিব খান ও সন্তানের ছবিতে ফেসবুক মাতালেন অপু-বুবলী
ট্রেলার প্রকাশের পর নিজের ফেসবুক পেজে শুভ লেখেন, একটা ভিডিও বদলে দিচ্ছে জীবনের গতিপথ…— এই বাক্যই যেন পুরো সিনেমার আত্মা। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন যেখানে জীবন সহজ, সেখানেই লুকিয়ে রয়েছে ধ্বংসের সম্ভাবনাও।
‘নীলচক্র’ শুধুমাত্র একটি থ্রিলার নয়, এটি একটি সামাজিক প্রতিচ্ছবি। এতে আমরা দেখি, ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার কিভাবে একজন মানুষের জীবনকে নিঃশেষ করে দিতে পারে, এবং সেই ঘটনাগুলো কিভাবে এক একটি সামাজিক সঙ্কটে রূপ নেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজিটাল যুগে গোপনীয়তা রক্ষা একটি বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে, আর এই সিনেমা সে প্রসঙ্গেই সতর্কতা জাগায়।
সিনেমাটির অভিনয়শিল্পীদের তালিকায় রয়েছেন: মন্দিরা চক্রবর্তী, ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম, খালেদা আক্তার কল্পনা, শাহেদ আলী, প্রিয়ন্তী ঊর্বী ও মাসুম রেজওয়ান।
বিশ্বপ্রিমিয়ারের মাধ্যমে সিনেমাটি ইতোমধ্যে লাস ভেগাসে ‘আমেরিকান ফিল্ম মার্কেট’-এ প্রদর্শিত হয়েছে, যা এই প্রজেক্টের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাকেও নির্দেশ করে।
এই ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নীলচক্র’ কোনো রঙিন স্বপ্নের গল্প নয়, বরং এক অন্ধকার বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান। আলোর মতো সত্য সবসময় দৃশ্যমান হয় না—কিছু সত্য থাকে ছায়ার গভীরে। ‘নীলচক্র’ সেই ছায়া থেকেই প্রশ্ন তোলে, সতর্ক করে, আর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—একটি ভিডিও কিভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে জীবন, সমাজ ও সভ্যতার ভিত।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি