News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:২৫, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আপডেট: ১৮:২৩, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আবারও শাহবাগে প্রাথমিকের নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা

আবারও শাহবাগে প্রাথমিকের নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তৃতীয় ধাপের প্রার্থীরা।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে তাদের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে জাদুঘরের সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এর আগে, সোমবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ১-১২তম এনটিআরসিএর নিবন্ধিত নিয়োগপ্রত্যাশীরা। পৌনে ২টার দিকে তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছ পুলিশ। এ সময় কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ শোনা যায়। পুলিশের লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন। এছাড়া আটক করা হয় কয়েকজনকে।

এরপর সন্ধ্যার দিকে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, দাবি আদায় না হলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে লাগাতার অবস্থান করবেন।

মঙ্গলবার দুপুরে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, কিছু লোকজন জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান করছেন। তবে তারা আজ সড়ক অবরোধ করেননি।

এদিকে, শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) নিবন্ধিত ১ম-১২তম নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষকরা সচিবালয়ে ডাক পেয়েছেন। সে অনুযায়ী আলোচনার জন্য ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৬,৫৩১ জনের নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। 

আরও পড়ুন: পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান, ছত্রভঙ্গ আন্দোলকারী শিক্ষকরা

আন্দোলনকারীরা বলেছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন চলছে।

আন্দোলনকারীদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় একই বছরের ২১ এপ্রিল। ১২ জুন সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ৩১ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬,৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। সুপারিশপ্রাপ্ত হননি, এমন ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬,৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ,৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।

কুমিল্লা থেকে আসা মাহবুবুর রহমান নামে একজন বলেন, আমরা এই সরকারের সময়ে সব ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমাদের আগে আরো দুই ধাপের নিয়োগ সম্পন্ন হয়ে তারা চাকরিতে যোগদান করেছেন। কিন্তু আমরা ঝুলে আছি। 

তিনি বলেন, আমাদের অনেকে আগের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন নতুন চাকরিতে যোগদান করবেন বলে। কিন্তু এটি না হওয়ায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমরা অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানাই। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

নওরীন চাঁদনী নামে আরেকজন বলেন, সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার আর্থিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরি করতেন। তারা এই প্রাথমিকে যোগদান করার জন্য কর্মরত সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। আমাদের মধ্যে অনেকেরই বয়স শেষ, তাদের আর কোনো চাকরিতে আবেদন করার সুযোগও নেই।

পরে একইদিনে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়