শ্যালিকার অ্যাকাউন্টে অবৈধ লেনদেন, পাপুলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের অ্যাকাউন্টে ১৪৮ কোটি অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে লক্ষীপুর-২ আসনের এমপি শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী মহিলা আসনের এমপি সেলিনাসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সূত্রে জানা গেছে।
এমপি পাপুলের শ্যালিকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৪৮ কোটি অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাই অর্থ পাচারের এ মামলায় জেসমিন প্রধান, শহিদ ইসলাম পাপুল, সেলিনা ইসলাম ও ওয়াফা ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পাপুলকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে দেশটিতে মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারের পর পাপুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন কুয়েতের আদালত।
দুদক অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে শ্যালিকা জেসমিন প্রধানকে মালিক দেখিয়ে ‘লিলাবালি’ নামে একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল। ওই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিনের পাঁচটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা পাচার করেন তিনি।
অভিযোগের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, “জেসমিনের বয়স ২৩ বছর। তাকে মালিক দেখিয়ে সেলিনা ইসলাম এমপি ও শহিদ ইসলাম পাপুল নিজেদের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের বৈধতা দেওয়ার জন্য ‘লিলাবালি’ নামে কাগুজে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বিভিন্ন ব্যাংকে জেসমিনের নামে প্রায় ৪৪টি অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। যেখানে শুধু এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেই রয়েছে ৩৪টি এফডিআর হিসাব। পাপুল এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। তাই এই সুবিধা নিতে তার কোনো বেগ পেতে হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন জানা যায়, অবৈধ উপায়ে অর্জিত জেসমিন প্রধানের নিজ নামে ২০টি এফডিআরে এক কোটি টাকা, সেলিনা ইসলামের নামে ২৯৫টি এফডিআরে ২০ কোটি ৮৬ কোটি টাকা, শহিদ ইসলাম পাপুলের নামে ২৩টি এফডিআরে দুই কোটি ১৮ লাখ টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক। আর পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলামের ৪১টি এফডিআরের দুই কোটি ২৯ লাখ টাকাসহ মোট ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা জেসমিন প্রধানের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের হিসাবে লগ্নি করে ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার ওভার ড্রাফটের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সব মিলিয়ে ১৪৮ কোটি টাকা পাচার করেছেন পাপুল। এসব ঘটনায় পাপুল, তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে গত মঙ্গলবার মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএজেড/এফএ