বাড়ছে ন্যূনতম কর, ছাড় পাবেন নতুনরা

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ন্যূনতম করের পরিমাণ এলাকাভেদে বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সঙ্গে কর কাঠামোতেও আনা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। 

সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত এক ভাষণে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এই বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেন।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে স্বাভাবিক ব্যক্তি ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের জন্য ন্যূনতম করের হার এলাকাভেদে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ করবর্ষ থেকে এটি নির্ধারণ করা হচ্ছে এককভাবে ৫ হাজার টাকা। নতুন করদাতাদের উৎসাহ দিতে তাদের জন্য ন্যূনতম কর নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, কর প্রদান সংস্কৃতির বিকাশ এবং কর-নেট সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ করবছরে স্বাভাবিক ব্যক্তি, ফার্ম ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের জন্য কর কাঠামো হবে:

• প্রথম ৩.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত
• পরবর্তী ১ লাখ টাকায় ৫% কর
• পরবর্তী ৪ লাখ টাকায় ১০% কর
• পরবর্তী ৫ লাখ টাকায় ১৫% কর
• পরবর্তী ৫ লাখ টাকায় ২০% কর
• ২০ লাখ টাকার ওপর ২৫% কর
• অতিরিক্ত আয়ের ওপর ৩০% কর

তবে ২০২৬-২৭ এবং ২০২৭-২৮ করবর্ষের জন্য প্রস্তাবিত হয়েছে কর ধাপ (slab) কমিয়ে সর্বোচ্চ হার ৩০ শতাংশে পৌঁছানো, অর্থাৎ মধ্যবর্তী কর হারের সংখ্যা হ্রাস করা হবে। 

আরও পড়ুন: স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডে নিত্যপণ্য পাচ্ছে ৫৭ লাখ পরিবার

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২%।

এই ঘাটতি পূরণে সরকার নির্ভর করবে বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর।

এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি (বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়) এবং অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক উপস্থাপিত বাজেট। সংসদ না থাকায় ড. সালেহউদ্দিন রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে বাজেট ঘোষণা করেন, যা ২০০৭-০৮ এবং ২০০৮-০৯ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাজেট ঘোষণার নজিরকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল (৩ জুন) বিকেল ৩টায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন।