তুলাকে কৃষি পণ্য ঘোষণাসহ ট্যাক্স প্রত্যাহারে পদক্ষেপের আশ্বাস

ছবি: সংগৃহীত
তুলাকে কৃষি পণ্য ঘোষণার পাশাপাশি দেশীয় তুলা উৎপাদন বৃদ্ধিতে আগামী দুই মাসের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
এছাড়া দেশীয় তুলার ওপর আরোপিত ট্যাক্স জরুরিভিত্তিতে প্রত্যাহারের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৭ মার্চ) পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে বাংলাদেশে তুলা চাষের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তামাক চাষ জমির উর্বরতা নষ্ট করছে। তামাকের পরিবর্তে তুলা চাষ করলে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি দেশও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।
তিনি আরও জানান, সরকার দেশের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না।
তিনি বলেন, দেশে এখন অর্থ সংকট চলছে, এ জন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। ট্যাক্স জিডিপি রেশিওতে লজ্জাজনক অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। এখান থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সম্পূর্ণ সদিচ্ছা আছে দেশের জন্য ভালো কিছু করার।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছানোর পক্ষে আমরা না। অনেক আগে থেকেই বিষয়টি জানা, কিন্তু ব্যবসায়ীরা তেমন কিছুই করেনি। ২০২৬ সালের মধ্যেই আমরা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করব। এখান থেকে পেছানোর সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণের বিচার বিলম্বিত হওয়ার কারণ পর্যাপ্ত ডিএনএ ল্যাব না থাকা’
দেশের তুলা খাতের উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশে তুলা খাতের উন্নয়নে নীতি সহায়তা দেওয়া হবে। দুই মাসের মধ্যে তুলা খাতের উন্নয়নে সরকার ভালো কিছু সিদ্ধান্ত নেবে। তুলাকে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং তুলা চাষে কৃষক যাতে স্বল্প সুদে ঋণ পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।
এনবিআর সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন (কাস্টম বন্ড) জানান, দেশীয় তুলার ওপর থেকে ট্যাক্স-ভ্যাট প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে এবং শিগগিরই এ বিষয়ে সুখবর আসবে।
বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবের বলেন, তুলাকে এখনো কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় কৃষকরা কৃষি ঋণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা পেলে দুই লাখ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করে আমদানি করা তুলার এক-চতুর্থাংশ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ড. ফকরে আলম ইবনে তাবিব জানান, খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাহত না করেই বছরে ২০ থেকে ২৫ লাখ টন তুলা উৎপাদন সম্ভব, যা বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সুদানে তুলা চাষে সফল উদ্যোক্তা মো. আবুল খায়ের জানান, উচ্চ ফলনশীল তিনটি নতুন জাতের তুলা পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে, যা তুলা উৎপাদনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা বলেন, তুলাকে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার বিষয়টি অনেকের অজানা ছিল। তাই নীতি সহায়তা দিয়ে এ খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো জরুরি।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইআরএফ, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি