News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ৪ জুন ২০২৫
আপডেট: ১৯:৩৩, ৪ জুন ২০২৫

গণতন্ত্র ও পাচার অর্থ ফেরতের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন ড. ইউনূস

গণতন্ত্র ও পাচার অর্থ ফেরতের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন ড. ইউনূস

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ৯ জুন চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে লন্ডন যাচ্ছেন। সফরের মূল লক্ষ্য পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন আদায়। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা অর্জনের প্রচেষ্টাও থাকবে এই সফরে।

বুধবার (৪ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী।

সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হিসেবে ১২ জুন বাকিংহাম প্রাসাদে যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ড. ইউনূস। একই দিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা চার্লসের হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন তিনি।

এছাড়া ১১ জুন ডাউনিং স্ট্রিটে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থপাচার রোধ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, গণতন্ত্র এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব। সফরের অংশ হিসেবে ড. ইউনূস চ্যাথাম হাউজের একটি সংলাপেও অংশ নেবেন।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে সব দেশের সঙ্গে কাজ চলছে। যুক্তরাজ্য সফরের অন্যতম অগ্রাধিকার হচ্ছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া।

তিনি জানান, বাংলাদেশ যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়েছে, তাদের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স (এমএলএ) চুক্তির আওতায় কাজ করছে। তবে সময় ও প্রটোকলের সীমাবদ্ধতার কারণে সব বিষয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে আলোচিত হয় না। তবুও এই সফরে অর্থ ফেরতের বিষয়টি গুরুত্বের সাথেই উপস্থাপন করা হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হবে কি না, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি রুহুল আলম সিদ্দিকী।  

আরও পড়ুন: ভদ্রলোকের মুখোশে গুমের ভয়াবহতা: প্রধান উপদেষ্টা

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই, আর কিছু লুকানোও হচ্ছে না।

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত কোনো রাজনৈতিক নেতা বা ব্যক্তি প্রত্যাবাসনের বিষয়েও সরকার খুব নির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগোচ্ছে বলে জানান সচিব। 

তিনি বলেন, কোর্টের আদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশের কাছে কোনো কিছু বলার সুযোগ নেই।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক তহবিল কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চাওয়াও সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে থাকবে। 

রুহুল আলম বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে জটিলতা বাড়ছে। অনেক দেশ তহবিল কমিয়ে দিচ্ছে। এই সংকট মোকাবেলায় যুক্তরাজ্যের সমর্থন আমরা চাইবো।

এ সফরে কোনো সমঝোতা স্মারক (MoU) বা আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই হওয়ার কথা নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব। 

তিনি আরও বলেন, এয়ারবাস ক্রয় বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা নিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। যদি যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে কেউ এই বিষয়টি তুলে ধরে, তাহলে সেটি বিবেচনা করা হতে পারে।

সরকার আশা করছে, এই সফর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং বাংলাদেশ তার আন্তর্জাতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়