ভোটের আস্থা ফেরাতে বাজেট প্রতিশ্রুতি

গত দেড় দশকে অব্যাহত অনিয়ম, প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন এবং রাজনৈতিক আস্থার সংকটে ভেঙে পড়া দেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (২ জুন) বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা ছাড়া গণতন্ত্র টিকবে না। সেই উপলব্ধি থেকেই নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার ইতোমধ্যে একাধিক গঠনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— নির্বাচন-সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার পুনর্মূল্যায়ন, প্রশাসনিক আচরণবিধি সংস্কার, এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর পরিমার্জন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। নির্বাচন পরিচালনায় যেসব নির্দেশনা ও আদেশ দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নবিদ্ধ, সেগুলো নতুন করে পর্যালোচনার আওতায় আনা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন: বাড়ছে ন্যূনতম কর, ছাড় পাবেন নতুনরা

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, গণতন্ত্রের প্রাণ হচ্ছে জনগণের ভোটাধিকার। আর সে ভোটাধিকার যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে গণতন্ত্রের ভিত্তিই দুর্বল হয়ে পড়ে। আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে।

সরকার শুধু নির্বাচন নয়, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা আরও কার্যকর করতে চায় বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা। 

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন রাজনৈতিক চাপমুক্ত থেকে কাজ করতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। কারণ, শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো ছাড়া কোনো সংস্কার দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজেটে সরাসরি নির্বাচনসংক্রান্ত আর্থিক বরাদ্দের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না থাকলেও নীতিগত অঙ্গীকারের বিষয়টি এবার স্পষ্ট। সুশাসনের জন্য ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, সেটি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের তদারকি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।