মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে বোমা হামলা, নিহত অন্তত ৪০

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় চাউং উ শহরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের আয়োজনে অংশ নেওয়া জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত এবং আরও ৮০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশু রয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন থেকে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যার দিকে চাউং উ শহরে থাদিঙ্গুত পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষে শত শত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। এ সময় উৎসবে অংশ নেওয়া লোকজন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করলে সেনারা হামলা চালায়।

অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির এক নারী সদস্য এএফপিকে জানান, সন্ধ্যা প্রায় ৭টার দিকে বিক্ষোভ চলাকালে একটি মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার এসে দুটি বোমা নিক্ষেপ করে। এতে কমপক্ষে ৪০ জন মারা যান এবং ৮০ জন আহত হন।

তিনি আরও বলেন, “আমরা আগেই হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছিলাম। তাই প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পালাতে সক্ষম হয়। কিন্তু অল্প সময় পরই প্যারাগ্লাইডারটি মাথার ওপর দিয়ে উড়ে এসে বোমা ফেলে। বোমার আঘাতে শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আমরা বিস্ফোরণের স্থানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা দেহের খণ্ডাংশ সংগ্রহ করছিলাম।”

চাউং উ এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, “প্যারাগ্লাইডারটি মাথার ওপর উড়তে দেখে মানুষ দৌড়াতে শুরু করে। ঠিক তখনই দুটি বোমা ফেলা হয়। আমার দুই সহযোদ্ধা আমার সামনেই মারা গেছেন।”

মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও সামরিক জান্তার হামলায় অন্তত ৪০ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এই হামলা নিয়ে জান্তা সরকারের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: পদার্থে নোবেল পেলেন ৩ মার্কিন বিজ্ঞানী

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। গণতন্ত্রকামী গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

আগামী ২৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। জান্তা সরকার বলছে, এই নির্বাচনই দেশের জাতীয় পুনর্মিলনের পথ তৈরি করবে। তবে বিদ্রোহীরা এই নির্বাচনের বিরোধিতা করে একে ‘সাজানো নির্বাচন’ আখ্যা দিয়েছে এবং তা ঠেকানোর হুমকি দিয়েছে।