News Bangladesh

স্পোর্টস ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ১৯ জুন ২০২৫

শান্ত-মুশফিকের রানের পাহাড়ে পাঁচশর দোরগোড়ায় থামল বাংলাদেশ

শান্ত-মুশফিকের রানের পাহাড়ে পাঁচশর দোরগোড়ায় থামল বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

সিরিজের প্রথম টেস্টে গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত যে একদম সঠিক ছিল, তা প্রমাণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে প্রথম ইনিংসে পাঁচশ ছুঁই ছুঁই এক সংগ্রহ গড়েও তা পূর্ণ হলো না টাইগারদের। গল টেস্টের তৃতীয় দিনে মাত্র ৩.৪ ওভার টিকেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ, দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৯৫ রানে।

এর আগে বুধবার (১৮ জুন) দিনের শেষ সেশনে আলোকস্বল্পতার কারণে খেলা বন্ধ থাকলে তৃতীয় দিনে (১৯ জুন) খেলা শুরু হয় ১৫ মিনিট আগে। তখন বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ৪৮৪ রান নিয়ে মাঠে নামে। শেষ উইকেট জুটিতে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা শেষ চেষ্টা চালান পাঁচশ ছোঁয়ার। দিনের দ্বিতীয় বলেই হাসান ভাগ্যগুণে চার পেয়ে যান আসিথা ফার্নান্দোর ডেলিভারিতে। এরপর আরও কয়েকটি রান এলেও কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক স্পর্শ হয়নি।

দিনের তৃতীয় ওভারে, মাত্র ১৬ বলের মধ্যে নাহিদ রানা ফেরেন শূন্য রানে। লেগ স্টাম্পের বাইরে আসা বল গ্লাভসে লাগিয়ে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। অপরপ্রান্তে হাসান মাহমুদ অপরাজিত থাকেন ৭ রানে।

এই ইনিংসটি ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে বাংলাদেশ গলেই ২০১৩ সালে করেছিল ৬৩৮, ২০১৮ সালে ৫১৩ এবং ২০২১ সালে ৫৪১/৭। এবার মাইলফলক ছুঁতে না পারলেও লড়াইয়ের রসদ রেখে গেছে শান্ত-মুশফিকদের ব্যাটিং।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশ ইনিংস শুরু করেছিল টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে। ওপেনিংয়ে ছিলেন সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয়। তবে শুরুতেই ধাক্কা খায় দল। বিজয় ১০ বল খেলে শূন্য রানে ফেরেন। এরপর সাদমান (৫৩ বলে ১৪) ও মুমিনুল (৩৩ বলে ২৯) ফিরে গেলে দলীয় রান দাঁড়ায় মাত্র ৪৫/৩।

আরও পড়ুন: বিসিসিআইকে ৫৩৮ কোটি ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

চতুর্থ উইকেটে হাল ধরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ২৬৪ রানের দুর্দান্ত জুটি। শান্ত ২০২ বলে তুলে নেন তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি এবং শেষ করেন ১৪৮ রানের ইনিংস দিয়ে (১৫ চার ও ১ ছক্কা)। অন্যদিকে, মুশফিক খেলেন ৩৫০ বলের ধৈর্যশীল ইনিংসে ১৬৩ রান, যাতে ছিল ৯টি চারের মার।

শান্ত বিদায়ের পর মুশফিকের সঙ্গী হন লিটন দাস। দ্বিতীয় দিনের মধ্যভাগে বৃষ্টির কারণে আড়াই ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকলেও তার আগেই লিটন তুলে নেন ১৮তম টেস্ট ফিফটি এবং মুশফিক পেয়ে যান সপ্তম দেড়শো। এরপর মুশফিক ফেরেন আসিথা ফার্নান্দোর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।

লিটন দাস তখন ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথে, কিন্তু ৯০ রানে মিলান রত্নায়েকের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর হয়ে ফেরেন। এরপর দ্রুত সাজঘরে ফেরেন জাকের আলি (৮), নাঈম হাসান (১১) ও তাইজুল ইসলাম (৬)। শেষ বিকেলে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলাদেশের ইনিংসে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন পেসার আসিথা ফার্নান্দো, যিনি ৮৬ রানে নেন ৪ উইকেট। অভিষেকে নামা থারিন্দু রত্নায়েক ৩ উইকেট পেলেও খরচ করেন ১৯৬ রান (৪৯.২ ওভার)। আরেক পেসার মিলান রত্নায়েকও তুলে নেন ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট মাত্র ৩৯ রানে।

শ্রীলঙ্কা বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাটিংয়ে নামে মাত্র ০.২ ওভার খেলেছে, তখনও রানের খাতা খোলেনি তারা। এখন বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ—এই রান পাহাড়কে পুঁজি করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা। মাঠে বল হাতে লড়াইয়ের মূল দায়িত্ব এখন হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানার কাঁধে।

তথ্য অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যখনই প্রথম ইনিংসে ৪৫০ রানের বেশি করেছে, তখন তারা কখনও হারেনি। এমনকি একমাত্র জয়টিও (৪৬৭ রানে) এসেছিল সেই রকম একটি ম্যাচেই।

তবে তথ্য পরিসংখ্যানের চেয়ে বড় সত্য এখন মাঠের খেলা। এই ইনিংসের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাংলাদেশ এবার বল হাতে কী করতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়