News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ২০ মার্চ ২০২৫
আপডেট: ১৩:৩৬, ২০ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’: টিউলিপ

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’: টিউলিপ

ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্য সরকারের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাকে ‘নিশানা করে ভিত্তিহীন’ প্রচারণা চালানোর অভিযোগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তার আইনজীবীদের পাঠানো একটি চিঠিতে এ অভিযোগ করা হয়। পরে দুদকের পক্ষ থেকেও এ চিঠির একটি জবাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বুধবার (১২ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির একজন পার্লামেন্ট সদস্য। তিনি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’-এর দায়িত্বে ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।

বাংলাদেশ সরকার সরাসরি তার সঙ্গে যোগাযোগ না করে কেন সংবাদমাধ্যমকে ব্রিফ করছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দেওয়া এক চিঠিতে টিউলিপের আইনজীবী বলেছেন, দুদকের এই কর্মপদ্ধতি যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের একটি অগ্রহণযোগ্য চেষ্টা।

দুদক শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করছে। এগুলোর মধ্যে তিনটিতে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম এসেছে। সেগুলো হলো- রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি থেকে লাভবান হওয়া, ঢাকায় জমি দখল ও মুদ্রা পাচার।

লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড ও হাইগেট এলাকার এমপি টিউলিপ কোনো ধরনের অনিয়ম করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ ছাড়ার পর এই প্রথম দুদকে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন তিনি।

টিউলিপের আইনজীবী স্টিফেন হারউডের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, দুদক বা বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কোনো ক্ষেত্রেই সুষ্ঠুভাবে, সঠিক ও স্বচ্ছতার সঙ্গে আনেননি। অবিলম্বে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ অভিযোগ তৈরি বন্ধ এবং তার ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের লক্ষ্যে’ আর কোনো মিডিয়া ব্রিফিং ও প্রকাশ্য মন্তব্য না করতে বলা হয়েছে চিঠিতে। 

আরও পড়ুন: জালিয়াতি করে সরকারি জমি হস্তান্তরের অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে 

চিঠিতে বলা হয়েছে, একটি সরকারি সংস্থা তদন্তের ক্ষেত্রে ‘যথাযথ প্রক্রিয়া, কার্যক্রম এবং সত্য প্রতিষ্ঠার চর্চা করে’, দুদক তা করেনি। তবে দুদক বলছে, তারা নথি ও বাস্তবতার নিরিখে কাজ করছে।

হারউড তার দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, টিউলিপ কোনোভাবেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিতে জড়িত ছিলেন না। যদিও ২০১৩ সালে ক্রেমলিনে একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাকে একই ছবিতে দেখা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে দুদকের পাল্টা চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তার মতো একজন রাজনীতিবিদ কীভাবে সরলতার কারণে নির্দোষ থাকার দাবি করেন।

টিউলিপের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২০০৪ সালে লন্ডন কিংস ক্রস এলাকায় উপহার হিসেবে পাওয়া সাত লাখ পাউন্ডের ফ্ল্যাটটি কোনো না কোনোভাবে আত্মসাতের ফল বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা সত্য নয়। কারণ, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুক্তির ১০ বছর আগেকার ঘটনা। কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি তাকে দিয়েছিলেন আব্দুল মোতালিফ নামে এক ব্যক্তি, যাকে খুব ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু এবং টিউলিপের গডফাদারের মতো বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গণমাধ্যমে দুদকের ব্রিফিংকে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্য চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

দুদকের চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, বড় হওয়ার পর তিনি জীবনের বেশির ভাগ সময় দুর্বৃত্তায়িত আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন বাড়িতে কাটিয়েছেন এবং এটিই প্রমাণ করে যে তিনি এই দলের দুর্নীতি থেকে লাভবান হয়েছেন।

দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ যুক্তরাজ্যের আদালতসহ যেকোনো আদালতে প্রমাণিত হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়