থুনবার্গকে ফিরিয়ে দিল ইসরায়েল

ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি নৌবাহিনী গাজাগামী মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ আটক করার পর আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে গ্রেফতার করা হয় সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ জন মানবাধিকারকর্মীকে। এরপর গ্রেটা থুনবার্গকে ইসরায়েল থেকে বহিষ্কার করে তাকে একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্রেটাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ছিল “নিরাপত্তাজনিত ও কূটনৈতিক প্রয়োজনে অনিবার্য।” এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর তাকে একটি বিমানে তোলা হয় এবং এর ছবি ইসরায়েলি মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়, যা আন্তর্জাতিক পরিসরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।
জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ গাজা উপকূলের দিকে রওনা হয় মানবিক ত্রাণ নিয়ে। জাহাজে ছিল শিশু খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানি—যা ইসরায়েলি অবরোধে বিপর্যস্ত গাজাবাসীর জন্য পাঠানো হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক জলসীমায়, গাজা উপকূল থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার দূরে, রবিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জাহাজটি আটক করে। এরপর জাহাজটিকে অশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী ১২ মানবাধিকারকর্মীকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: অস্ট্রিয়ায় স্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ৯
‘ম্যাডলিন’ জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠনের কর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
এই ১২ জন হলেন- গ্রেটা থুনবার্গ (সুইডেন) – পরিবেশ আন্দোলনের মুখপাত্র, রিমা হাসান (ফ্রান্স) – ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য, ইয়াসেমিন আচার (জার্মানি) – মানবাধিকারকর্মী, ব্যাপ্তিস্ত আন্দ্রে (ফ্রান্স) – নাগরিক সংগঠনের সদস্য, থিয়াগো আভিলা (ব্রাজিল) – জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী, ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, রিভা ভিয়া (ফ্রান্স), সুলাইব ওর্দু (তুরস্ক), সার্জিও তোরিবিও (স্পেন), মার্কো ফন রেনেস (নেদারল্যান্ডস)।
এই অভিযানের পরপরই ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দার মুখে পড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে “মানবিক সহায়তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন” বলে অভিহিত করেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই জাহাজটি গাজায় ইসরায়েলের আরোপিত সামরিক অবরোধ অমান্য করে ঢুকতে চেয়েছিল, যা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
গ্রেটা থুনবার্গ, যিনি বিশ্বজুড়ে জলবায়ু সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পরিচিত, তার বহিষ্কারের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। অনেকে একে একটি নিঃশব্দ বার্তা হিসেবে দেখছেন—যেখানে মানবিকতা ও প্রতিবাদের অধিকার আন্তর্জাতিক রাজনীতির বলি হচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি