News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৪৮, ১০ জুন ২০২৫

নাসিরনগরে শসা চুরি নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

নাসিরনগরে শসা চুরি নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

মাত্র কিছু শসা চুরিকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে একটি গ্রাম। 

মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে চার ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, যা এলাকায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় সরকার বাড়ির জুয়েল মিয়া তার বাড়ির পাশে শসা চাষ করেছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে রাতের আঁধারে খেত থেকে শসা চুরি হয়ে যাচ্ছিল। প্রথমে সন্দেহ করা হয়, প্রতিদ্বন্দ্বী বড় হাটি সমাজের যুবকেরা এ কাজের সঙ্গে জড়িত।

বিষয়টি নিয়ে সরকার বাড়ির পক্ষ থেকে বড় হাটি সমাজের কাছে বিচার সালিশ চাওয়া হয়। কিন্তু বড় হাটি পক্ষ বিচার দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দুই পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এরপর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে পুরো দক্ষিণ পাড়া এলাকায়।

দুই পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হন, যাদের মধ্যে গুরুতর আহত কয়েকজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বাকি অধিকাংশ আহত ব্যক্তি নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: রেস্টুরেন্টে টিস্যু না পেয়ে রণক্ষেত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া

আহতদের মধ্যে শনাক্ত করা গেছে – মাসুক মিয়া, আমিন মিয়া, লদন মিয়া, সারোয়ার, জান আলম, রজব আলী, সাকিব, ফুল জাহান, কাদির, এমরান, ছাদেক, বিং রাজ বেগম, হাসান, ছালেক, হাফিজ, নজরুল, ইমন, আজাদ ও আজিজ সহ আরও অনেকে।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে নাসিরনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই ঘটনায় দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে দায় চাপাচ্ছে। সরকার বাড়ির দাবি, বড় হাটি সমাজের যুবকেরা শসা চুরি করেছিল এবং বিচার না মেনে উল্টো হামলা চালায়। অপরদিকে বড় হাটি পক্ষ বলছে, চুরির অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং সরকার বাড়ির লোকজনই প্রথমে হামলা শুরু করে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, উভয় সমাজের মধ্যে পূর্বেও ছোটখাটো দ্বন্দ্ব ছিল। শসা চুরি এ ঘটনার শুধু প্রকাশ্য রূপ। এমনকি ঘটনার আগের দিন রাতেই কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির খবর পাওয়া গেছে, যা মঙ্গলবার সকালের সহিংসতায় রূপ নেয়।

প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়তে পারতো। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং পুনরায় সংঘর্ষ ঠেকাতে সর্তক অবস্থানে রয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়