রেস্টুরেন্টে টিস্যু না পেয়ে রণক্ষেত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় একটি রেস্টুরেন্টে টিস্যু চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৯ জুন) রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পাঠানপাড়া মোড়ে চলে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, যেখানে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের কারণে দুই ঘণ্টার জন্য সরাইল-লাখাই আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষ্যে ভিড় জমেছিল সরাইল উপজেলার পাঠানপাড়া মোড়ের রেস্টুরেন্টগুলোতে। ‘এরাবিয়ান ফুচকা হাউস’ নামে এক রেস্টুরেন্টে কুট্টাপাড়া গ্রামের এক যুবক রাব্বি খাবার শেষ করে টিস্যু চান। তখন কর্মচারীরা জানান, টিস্যু শেষ হয়ে গেছে। এতেই শুরু হয় বাকবিতণ্ডা, যা পরে হাতাহাতিতে রূপ নেয় রাব্বি ও রেস্টুরেন্টের মালিক মুজিবুর রহমানের মধ্যে।
স্থানীয়দের অনেকে দাবি করেন, কুট্টাপাড়া ও পাঠানপাড়া গ্রামের মধ্যে দীর্ঘদিনের ছোটখাটো বিরোধ ও উত্তেজনা ছিল, যা কখনো প্রকাশ্যে আসেনি। টিস্যু নিয়ে শুরু হওয়া এই বিবাদ সেই উত্তেজনার বিস্ফোরণ ঘটায়। মুহূর্তেই দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে জড়ো হন।
আরও পড়ুন: নড়াইলে শিক্ষার্থীর ঘরে স্নাইপার, যৌথবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার
সংঘর্ষটি হয় রাতের আঁধারে। দুই পক্ষই টর্চলাইট, মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট এবং বাইকের হেডলাইট ব্যবহার করে একে অপরকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রের ব্যবহার। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হয়েছে।
ঘটনার সময় আঞ্চলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সরাইল-লাখাই সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে। যাত্রীরা গাড়িতে আটকে পড়েন, অনেকে পাশের দোকান ও বাড়িতে আশ্রয় নেন। এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চরম আতঙ্ক।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সরাইল থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হাসান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেনি এবং কাউকে আটক করা হয়নি।
পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরাইল উপজেলা প্রশাসনও ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঠেকাতে সামাজিক উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি