জেলমুক্তির সম্ভাবনায় ইমরান খান

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে দায়ের করা আলোচিত আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১১ জুন। এই দিনটিকে ‘নির্ণায়ক’ বলে অভিহিত করেছে পিটিআই নেতৃত্ব।

পিটিআইর বর্তমান চেয়ারম্যান গওহর আলী খান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খান ও বুশরা বিবির দণ্ড বাতিলের আপিলের শুনানি হবে ওইদিনই। 

গওহর বলেন, ১১ জুন আমাদের দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশাবাদী, ইমরান খান ও বুশরা বিবি জামিনে মুক্ত হবেন।

তিনি আরও জানান, আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় জাতীয় জবাবদিহিতা ব্যুরো (ন্যাব) তাদের যুক্তিতর্ক প্রস্তুতের জন্য অতিরিক্ত সময় চাইলে আদালত শুনানির নতুন দিন হিসেবে ১১ জুন নির্ধারণ করেন। এর আগে হাইকোর্ট শুনানির তারিখ পিছিয়ে দেয়।

এদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন উঠেছে, জামিনে মুক্তি পেলেই ইমরান খান মাঠে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারেন। গওহর আলী খানের বক্তব্য অনুযায়ী, পিটিআই অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন ইমরান খান নিজেই।

আরও পড়ুন: তৃতীয় দিনেও থামেনি আগুন, উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস

খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরও সম্প্রতি বলেছেন, ঈদুল আজহার পর তারা দেশব্যাপী বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করবেন। এই ঘোষণার সঙ্গে গওহর আলীর বক্তব্য মিলে যাওয়ায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পিটিআই একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা ঘটাতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান খানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে কিছু মামলায় দণ্ডিত হন তিনি, যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। পাকিস্তান সরকার অভিযোগ করেছে, এই ট্রাস্টের মাধ্যমে কয়েকশ মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন ইমরান খান ও তার স্ত্রী। তবে ইমরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে আটক থাকা ইমরান খান ইতিমধ্যে চারটি ঈদ কারাগারে কাটিয়েছেন। পিটিআই বলছে, এ বছর ঈদের পরই পরিস্থিতির বড় পরিবর্তন আসতে পারে।

জামিন শুনানিকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে জল্পনা তুঙ্গে। ১১ জুন কি ইমরান খানের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের দিন হবে, নাকি আদালতের রায় আরও দীর্ঘ লড়াইয়ের সূচনা ঘটাবে—সেদিকেই তাকিয়ে এখন গোটা পাকিস্তান।