শেবাকৃবিতে শিক্ষার্থী মারধর: অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের শিক্ষার্থী দুর্জয় কুমারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই লেভেলের শিক্ষার্থী হাসিব, হিমেল ও তাওহীদের বিরুদ্ধে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ২৪ হল সংলগ্ন পুকুরের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, দুর্জয়কে একা পেয়ে অভিযুক্তরা প্রথমে তাকে গালিগালাজ করে এবং পরে কিল, ঘুষি ও লাথি মারে। একপর্যায়ে তাওহীদ ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করতে উদ্যত হলে পথচারীরা তাকে নিবৃত করেন।

ভুক্তভোগী দুর্জয় বলেন, ক্লাস শেষে সাইকেলে করে হলে ফেরার সময় তারা তার পথ আটকে দাঁড়ায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে গালিগালাজ ও মারধর শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এই ঘটনার সঙ্গে একই অনুষদের ২১ ব্যাচের রি-এড সজিব মুজদাইন ও আরাফাত মিরাজ জড়িত থাকতে পারে। তারা অভিযুক্তদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা বলেও অভিযোগ করেন।

মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে দুর্জয়ের সহপাঠী ও অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের কক্ষে ভাঙচুর চালায়। তারা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বহিষ্কারের দাবিতে প্রক্টর ও ডীন বরাবর আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আরফান আলী জানান, তিনি বিষয়টি জানার পরপরই হল প্রভোস্ট ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ঘটনা তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আরও পড়ুন: দীপংকর তালুকদার কলেজ এখন বেতবুনিয়া কলেজ

অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগে নারী উত্যক্তকরণ, মাদক দ্রব্য সেবন, জুনিয়রদের র‌্যাগিং সহ বিভিন্ন অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে তারা বারবার পার পেয়ে যায় বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

১২ ফেব্রুয়ারি রি-এড সি.আর সজীব মুজদাইনকে সি.আর পদ থেকে বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তদের সঙ্গে অন্য শিক্ষার্থীদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করলে দুর্জয় সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতিবাদ জানান। এরপরই দুর্জয়কে মারধর করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত তিনজন পলাতক রয়েছে।

অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

এই ঘটনায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।