News Bangladesh

স্পোর্টস ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৪৭, ২৯ মে ২০২৫

নেতৃত্ব বদলের পথে বিসিবি: প্রস্তুত আমিনুল 

নেতৃত্ব বদলের পথে বিসিবি: প্রস্তুত আমিনুল 

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) শীর্ষ পদে ফের পরিবর্তনের আলোচনায় উত্তাল দেশের ক্রীড়াঙ্গন। মাত্র ৯ মাস আগে দায়িত্ব নেওয়া ফারুক আহমেদের বিদায় ঘণ্টা বাজতে পারে দ্রুতই। 

সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে আলোচনায় উঠে এসেছে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম।

গত কয়েকদিনে এ বিষয়ে আলোচনার গতি বেড়েছে। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের বৈঠকের পর বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। 

বৈঠকে ফারুককে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে— সরকার বিসিবির শীর্ষ পদে পরিবর্তন চায়। ফারুক যদিও সরকার চাচ্ছে না এমনটা গণমাধ্যমে স্বীকার করেছেন, তবে তিনি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। পদত্যাগ নিয়ে চিন্তা-ভাবনার জন্য সময় চেয়েছেন দুই-একদিন।

তবে কেবল সরকারের ইচ্ছায় বিসিবিতে রদবদল সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) বোর্ডে সরাসরি সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে। ফলে, ফারুক আহমেদ নিজ থেকে পদত্যাগ না করলে আইনি ও কূটনৈতিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। আইসিসির নজর এড়িয়ে পরিবর্তন আনার পথ খুঁজছে সংশ্লিষ্ট মহল।

এ প্রেক্ষাপটে বিকল্প হিসেবে সামনে আসছে আমিনুল ইসলামের নাম। 

বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বোর্ড পরিচালক হতে হয় নির্বাচিত অথবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত কাউন্সিলর হিসেবে। 

সূত্র জানায়, সরকার আমিনুলকে এনএসসির প্রতিনিধি হিসেবে বোর্ডে আনার পরিকল্পনা করছে। এরপর পরিচালকদের ভোটে তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য সভাপতি নির্বাচিত করা হতে পারে। এই সময়কাল আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় বিসিবির নির্বাচনের আগ পর্যন্ত। 

আরও পড়ুন: ব্রাজিলের দল ঘোষণা করলেন আনচেলত্তি

এমন পরিস্থিতিতে আমিনুল ইসলামের প্রতিক্রিয়া এসেছে সংযত ও দায়িত্বশীলভাবে। 

তিনি জানিয়েছেন, আমাকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সভাপতির দায়িত্ব নিতে বলা হয়নি। তবে ১০-১৫ দিন আগে সরকারের একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছিল। তারা দেশের ক্রিকেটের প্রয়োজনে আমাকে কিছুদিনের জন্য চাচ্ছে, আমি তাতে সম্মতি দিয়েছি।

বর্তমানে আমিনুল ইসলাম আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া হাইপারফরম্যান্স কার্যক্রম ও কোচিং এডুকেশনেরও প্রধান। তবে বিসিবির দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে আইসিসির সঙ্গে আলোচনায় ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

তার ভাষায়, আইসিসিকে জানিয়েছি, তারা আমাকে সহযোগিতা করবে এবং দায়িত্ব শেষে ফিরতে চাইলে তাদের দরজা আমার জন্য খোলা থাকবে।

এদিকে বিসিবির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়েন, বিতর্কিত লিগ আয়োজন, আর্থিক স্বচ্ছতার প্রশ্ন এবং জাতীয় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনার মুখে ফারুক আহমেদের নেতৃত্ব এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তার বোর্ডে এনএসসি মনোনীত হিসেবে আসার ফলে সরকার তাকে সরাতে চাইলে প্রক্রিয়াগতভাবে বাধা তুলনামূলকভাবে কম।

বিসিবির গঠনতন্ত্রে ‘‘অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি’’ পদটি উল্লেখ না থাকলেও, প্রক্রিয়াটি পরোক্ষভাবে সম্ভব। অতীতে এনএসসি কাউন্সিলরদের সরিয়ে দিয়ে নতুন কাউন্সিলর মনোনয়ন দিয়ে পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনার নজিরও রয়েছে।

তবে বিসিবির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। ৩১ মে বোর্ড সভার আগে পরিস্থিতি আরও পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ঈদের আগেই বিসিবির নেতৃত্বে পরিবর্তনের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

শেষ কথা হিসেবে বলা যায়, ক্রিকেটার থেকে প্রশাসক হয়ে ওঠার পথে আমিনুল ইসলামের সম্ভাব্য পদক্ষেপ শুধু বিসিবির নেতৃত্বেই নয়, দেশের ক্রীড়া ব্যবস্থাপনায়ও নতুন বার্তা দিতে পারে। তবে তা কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তার উত্তর মিলবে আগামী নির্বাচনের পরই।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়