আত্মবিশ্বাসে ভর করে নতুন চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আরব আমিরাতের বিপক্ষে হতাশাজনক সিরিজ হারের রেশ এখনো কাটেনি। ক্রিকেট সমর্থকদের চোখে যখন প্রশ্ন—এই বাংলাদেশ আসলেই কোথায় দাঁড়িয়ে—ঠিক তখনই সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ। পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ থেকে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ, আর বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস জানিয়ে দিয়েছেন, অতীত নয়, তারা তাকিয়ে আছেন সামনে—নতুন সিরিজে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে।
সিরিজের আগে লাহোরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিটনের কণ্ঠে ছিল আত্মবিশ্বাস ও বাস্তবতা মিশ্রিত এক স্বর, আমাদের বিশ্বাস আছে, বিশ্বের যেকোনো দলকে হারাতে পারি। কিন্তু সেই বিশ্বাসের সঙ্গে মাঠে প্রয়োগও জরুরি। ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে, সেটাই আসল।
আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে ক্রিকেট বিশ্লেষক—সব জায়গায় ছড়িয়েছে সমালোচনার ঝড়। বিষয়টি অস্বীকার না করে লিটন বরং গ্রহণ করছেন সেটা ইতিবাচকভাবে, ভালো না খেললে আলোচনা-সমালোচনা হবেই। আমরা জানি কোথায় কী ভুল করেছি। চেষ্টা করব যেন সেই ভুল এখানে না হয়।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার অভাব যেন সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। গত বছরের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে হোয়াইটওয়াশের পর সবার মনে যে আশার সঞ্চার হয়েছিল, তা মিলিয়ে যায় এশিয়ান গেমস ও সাম্প্রতিক সিরিজে অসংলগ্ন পারফরম্যান্সে।
তবে লিটন বলছেন, সমাধান খোঁজা হচ্ছে, আমরা ধারাবাহিক হতে পারলে হয়তো বিশ্বের সেরা দলের কাতারে থাকতাম। কিন্তু কিছু ঘাটতি আছে, সেটি আমরা মেনে নিয়েই উন্নতির চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: ইনজুরিতে ছিটকে গেলেন মুস্তাফিজ
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের অতীত পারফরম্যান্স যেমন নড়বড়ে, পাকিস্তানের বিপক্ষেও সেই রেকর্ড খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়—১৯ ম্যাচে মাত্র তিন জয়। তবে এবার পরিস্থিতি আলাদা, বলছেন লিটন। নতুন বল, নতুন পরিকল্পনা, নতুন প্রতিপক্ষের সামনে নিজেদের ভালো ক্রিকেট খেলাটাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তিনি।
‘পাকিস্তান দারুণ এক দল, বিশেষ করে তাদের বোলিং ইউনিট। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, কীভাবে নিজেদের খেলাটাকে উন্নত করা যায়। ফলাফল সবসময় আপনার দিকে আসবে না, কিন্তু আপনি কীভাবে খেলছেন, সেটাই বড় বিষয়।
বাংলাদেশ কোচ ফিল সিমন্সও একই সুরে বলেছিলেন, আরব আমিরাতের সিরিজ হার দলের আত্মবিশ্বাস ভাঙেনি, বরং ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্দীপনা দিয়েছে।
সেই সূত্র ধরেই লিটন জানালেন, আমরা ফল নিয়ে ভাবছি না। বরং প্রক্রিয়াটা ঠিক থাকলে ফল আপনিই আসবে। আমাদের এখন দরকার, ধারাবাহিকভাবে ভালো ক্রিকেট খেলা।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আজ রাত ৯টায় শুরু হচ্ছে প্রথম টি-টোয়েন্টি। এরপর ৩০ মে ও ১ জুন সিরিজের বাকি দুই ম্যাচও অনুষ্ঠিত হবে একই ভেন্যুতে। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ দল দুই দিন অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে। প্রস্তুতি স্বল্প হলেও লিটন জানাচ্ছেন, তারা পরিকল্পনা সাজিয়ে নামছেন—জয়ের লক্ষ্য নিয়ে।
এই সিরিজ বাংলাদেশের জন্য শুধুই জয়-পরাজয়ের হিসেব নয়; এটি আত্মবিশ্বাস ফেরানোর লড়াই, ধারাবাহিকতার খোঁজ এবং ক্রিকেটীয় সংস্কৃতিতে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথে এক নতুন যাত্রা। লিটনের কণ্ঠে যে আত্মবিশ্বাস শোনা যাচ্ছে, সেটি শুধু কথায় নয়, প্রতিফলিত হোক তাদের খেলাতেও—এটাই প্রত্যাশা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি