গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপে শিক্ষার বিকল্প নেই: ফখরুল

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে কেবল নির্বাচনের দাবি করলেই চলবে না, তার সাথে সাথে গণতান্ত্রিক অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৯ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁও রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

এসময় তিনি শিক্ষার মানের অবনতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জাতীয় উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র মানে শুধু একটি পদ্ধতি নয়, এটি একটি চর্চা। আমরা নির্বাচন চাই, ছাত্রদের অধিকার চাই—কিন্তু সেই অধিকারকে দায়িত্বের সাথে গ্রহণ করতে হবে। গণতন্ত্রের যেমন অধিকার আছে, তেমনই আছে দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করলেই গণতন্ত্র হবে টেকসই এবং প্রাতিষ্ঠানিক।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন সময় আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ঘটেছে; কিন্তু দুঃখজনকভাবে শিক্ষার মান নেমে গেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। 

আজকে সারাদেশেই শিক্ষার মান উদ্বেগজনকভাবে খারাপ হয়ে গেছে। কে দায়ী, তা নিয়ে বিতর্কে না গিয়ে আমি বলবো—সামগ্রিকভাবে মান কমে গেছে, বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ

বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতামূলক বাস্তবতায় ছাত্রদের সক্ষম করে তোলার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই বিশ্বে টিকে থাকতে হলে জ্ঞানের প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে হবে। টেকনোলজি এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে আমরা কোপ-আপ করতে না পারলে পিছিয়ে পড়ব। কাজেই আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে সেই মানের করে গড়ে তুলতে হবে।

রিভারভিউ হাই স্কুলের ঐতিহ্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুলের পরেই এই প্রতিষ্ঠানের স্থান ছিল। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান কমে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাইকে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে যেন এই বিদ্যালয় তার গৌরব ফিরে পায়। শিক্ষার বিষয়ে কোনো আপস করা চলে না।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম, খেলাধুলা ও শারীরিক প্রশিক্ষণেও গুরুত্ব দিতে হবে। যেভাবে পড়াশোনায় প্র্যাকটিস করতে হয়, সেভাবেই খেলাধুলায়ও নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে।

শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা কোনো ছাড় দেবেন না। শিক্ষার্থীদের গাফিলতি যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। তারা যেন শিখছে, বুঝছে এবং প্রয়োগ করতে পারছে—তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠান শেষে রিভারভিউ স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র‍্যালি ঠাকুরগাঁও শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয়ের অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন।

সুবর্ণজয়ন্তীর এই আয়োজনে শিক্ষা, গণতন্ত্র ও জাতীয় উন্নয়নের গভীর সম্পর্ক তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, রিভারভিউ হাই স্কুল যেন তার পূর্ণ ঐতিহ্য ফিরে পায় এবং ঠাকুরগাঁওয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে আবারও তার সম্মানজনক অবস্থানে ফিরে আসে— এই রজতজয়ন্তীর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।