নির্বাচনের জন্য এপ্রিল উপযুক্ত নয়: ফখরুল

জাতীয় নির্বাচনের জন্য এপ্রিল মাস মোটেই উপযোগী নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (৭ জুন) ঈদুল আজহার দিন সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় হিসেবে এপ্রিল মাস নির্ধারণ করা হয়েছে— যেটি বাংলাদেশের আবহাওয়াগত, ধর্মীয় ও শিক্ষাবর্ষ সংক্রান্ত বাস্তবতায় অত্যন্ত বিবেচনাহীন একটি সিদ্ধান্ত। এই মাসে প্রচণ্ড গরম, ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া, ওই সময় রমজানের ঠিক পরপরই পাবলিক পরীক্ষা চলে, ফলে প্রচার-প্রচারণা চালানো অত্যন্ত দুরূহ হবে। রোজার মাসে ভোটের কার্যক্রম পরিচালনা করা একদমই বাস্তবসম্মত নয়।

তিনি জানান, এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি গতকাল রাতেই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলটি বরাবরই ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপির দাবি, ডিসেম্বর মাস রাজনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত দিক থেকে অধিক উপযোগী এবং দেশের জনসাধারণের প্রত্যাশাও তাই ছিল। 

আরও পড়ুন: নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদের জামাতে অংশ নিলেন তারেক রহমান

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা আগেই স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, এমন সময়সূচি বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ সিদ্ধান্তে দেশের মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি।

ঈদ উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে জাতির উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং আমার পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ঈদ মোবারক ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ঈদুল আজহার দিনটি আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ‘কোরবানি’র ভাষায়— ‘ওরে হত্যা নয় আজি, সত্যগ্রহ, শক্তির উদ্বোধন’। এই দিনে আমরা সত্যকে খুঁজে পাই ত্যাগের মাধ্যমে, এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রয়াস নেই। সমাজ ও মানুষের কল্যাণেই এই শিক্ষা প্রয়োগ করা উচিত।

মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও এজেডএম জাহিদ হোসেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।

এ সময় দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য আবদুস সালাম, আবদুল হালিম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ আলী, আমিনুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি ঈদে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। তার অনুপস্থিতিতে দলের মহাসচিব ও শীর্ষ নেতারা এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন।