১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে সত্যিকারের নির্বাচন

ছবি: সংগৃহীত
১৭ বছর পর বাংলাদেশে ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
লন্ডনের প্রভাবশালী নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউস-এর আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের নীতি সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় চ্যাথাম হাউসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-এর মূল হল কক্ষে আয়োজিত এই সংলাপে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নেন ড. ইউনূস।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিক, গবেষক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
ড. ইউনূসের সফরের দ্বিতীয় দিনে, লন্ডন সময় সকাল ৯টায় তিনি যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোনাথন পাওয়েল-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি, আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
এরপর সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি সাক্ষাৎ করেন চ্যাথাম হাউসের এশিয়া-প্যাসিফিক প্রোগ্রামের পরিচালক বেন ব্ল্যান্ড এবং দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. চিয়েটিজ বাজপাই-এর সঙ্গে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৭ বছর পর আমরা একটি সত্যিকারের নির্বাচন করতে যাচ্ছি। ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
তিনি জানান, সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই মাসে একটি ‘জুলাই সনদ’ বা জাতীয় চার্টার প্রকাশ করা হবে, যা নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি ২০২3 সালের জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, তাদের দৃশ্যমান বিচারও সম্পন্ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি করে সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনে কাজ করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি স্পষ্ট করে জানান, নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারের কোনো দায়িত্বে আমার থাকার কোনো ইচ্ছা নেই। আমি শুধু একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করছি।
ড. ইউনূস জানান, তার সরকারের অধীনে এখন আর সরকারি সেবা পেতে দালালের প্রয়োজন হয় না।
তিনি বলেন, আগে পাসপোর্টসহ বিভিন্ন সরকারি সেবা পেতে মাধ্যমের দরকার হতো, যা দুর্নীতির সুযোগ তৈরি করত। এখন সব সেবা অনলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে, যাতে নাগরিকরা সহজেই সেবা পান।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা সাত বছর আগে পাঁচ মাস বয়সে বাংলাদেশে এসেছিল, এখন তারা কিশোর বা যুবক। মার্কিন সহায়তা কমে যাওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে— তাদের দায়িত্ব এখন কে নেবে? আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি।
এই সফরে ড. ইউনূস শুধু একটি নির্বাচনের ঘোষণা দেননি, বরং আগামী বাংলাদেশের কাঠামো পুনর্গঠনের রূপরেখা, ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি এবং প্রশাসনিক সংস্কারের অগ্রগতি তুলে ধরেছেন। আন্তর্জাতিক মহলের উপস্থিতিতে তার এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি