News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ২৮ মে ২০২৫

৪ দিনের টোকিও মিশনে প্রধান উপদেষ্টা

৪ দিনের টোকিও মিশনে প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হংকং হয়ে তিনি টোকিওর উদ্দেশে রওনা হন। জাপানের স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরে তার টোকিও পৌঁছার কথা রয়েছে।

এই সফর শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্বিপাক্ষিক কূটনীতি, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, শ্রম রফতানি এবং সামাজিক সম্পৃক্ততার দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সফরকালে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে, যার আওতায় বিনিয়োগ, জ্বালানি, প্রযুক্তি, রেল ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে সহায়তার কথা বলা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সফরে জাপানের কাছে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা প্রত্যাশা করছে। প্রস্তাবিত সহায়তার মধ্যে রয়েছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বাজেটারি সহায়তা, ২৫০ মিলিয়ন ডলার রেল খাতের উন্নয়নের জন্য এবং বাকি ২৫০ মিলিয়ন ডলার অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচি অনুযায়ী, তিনি ২৯ ও ৩০ মে টোকিওতে আয়োজিত ৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়া-তে অংশগ্রহণ করবেন। সেখানে তিনি ‘অশান্ত বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে মূল বক্তৃতা দেবেন। ফোরামে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। 

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ভূকম্পনে কেঁপে উঠল দেশ

এর পাশাপাশি, সফরের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকের আগে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। আলোচনায় কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার, অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি সহযোগিতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

এছাড়া, জাইকা (JICA) প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিকো এবং জেট্রো প্রেসিডেন্ট কিমুরা ফুকুনারির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে অংশ নেবেন ড. ইউনূস। সেখানে জাইকার অর্থায়নে পরিচালিত চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত একাধিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে টোকিওতে আয়োজিত মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনার, যেখানে জাপানে দক্ষ কর্মীবাহিনীর চাহিদা পূরণে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে বিশেষ বক্তব্য দেবেন তিনি। একই দিনে সোকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করবেন তিনি।

এছাড়া, জাপানের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম—নিক্কেই, এনএইচকে, আসাহি শিম্বুন, আসাহি টিভি ও নিপ্পন টিভিকে সাক্ষাৎকার দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। সফর শেষে ৩১ মে রাতে সিঙ্গাপুর হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তিনি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটাতে পারে। বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সফরের সাফল্য দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়