মধ্যরাতে ভূকম্পনে কেঁপে উঠল দেশ

ফাইল ছবি
ঘুমন্ত নগরী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হঠাৎ চমকে ওঠে এক অদৃশ্য কম্পনে। মাঝরাতের নিস্তব্ধতায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে—ঘরবাড়ি কেঁপে ওঠে, মানুষ দৌড়ে বেরিয়ে আসে রাস্তায়। ভারতের মণিপুরে উৎপন্ন একটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প এই অভিজ্ঞতা এনে দেয় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) দিবাগত রাত ২টা ২৪ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোইরাং শহরের কাছাকাছি, ভূপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ৪৭ কিলোমিটার গভীরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.২। কেন্দ্রবিন্দুটি ছিল মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে প্রায় ৩৯ কিলোমিটার দূরে এবং ঢাকার উত্তর-পূর্বে প্রায় ৩৫৪ কিলোমিটার দূরত্বে।
ভলকানো ডিসকভারি, ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি বিষয়ক পর্যবেক্ষণ সংস্থা, জানিয়েছে যে ভূমিকম্পটি অপেক্ষাকৃত অগভীর ছিল। ফলে কম্পনটি বিস্তৃত এলাকায় অনুভূত হয় এবং একই মাত্রার গভীর ভূমিকম্পের তুলনায় এর প্রভাব ছিল অধিকতর স্পষ্ট ও তীব্র।
আরও পড়ুন: সাম্য হত্যার তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য: ডিএমপি
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ, বিশেষ করে সিলেট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ময়মনসিংহে, ভূমিকম্পটি বেশ ভালোভাবে অনুভব করেন বলে জানান। ঘুম ভেঙে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগের দিন, সোমবার দিবাগত রাত ৩টা ২ মিনিটেও আরেকটি ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল, যার মাত্রা ছিল ৩.৪ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের চিন হাখা অঞ্চল, যা সিলেট থেকে প্রায় ২৬৫ কিলোমিটার দূরে। এছাড়া ১১ এপ্রিল বিকেলেও ঢাকা ও সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূকম্পনের ঘটনা ঘটেছে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, অগভীর উৎপত্তিস্থলের ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এগুলো ভূ-পৃষ্ঠে দ্রুত এবং তীব্রভাবে প্রভাব ফেলে। তাই ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে ভবন নির্মাণে মানসম্পন্ন কাঠামো অনুসরণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
এ ধরনের কম্পন ক্ষয়ক্ষতির কারণ না হলেও এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্ক সংকেত—প্রস্তুতির ঘাটতি যে বড় বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে, সেটাই যেন স্মরণ করিয়ে দেয় এই মধ্যরাতের কাঁপন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি