আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ঢাকা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের

ছবি: সংগৃহীত
কলেজ প্রশাসন থেকে দাবি মেনে নেওয়ার ‘আশ্বাস না মেলায়’, আন্দোলন ‘চালিয়ে যাওয়ার’ ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ চিকিৎসক কামরুল আলম। এ সময় একাডেমি কাউন্সিলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ওই আলোচনা থেকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো ‘আশ্বাস পাওয়া যায়নি’৷ এ কারণে হোস্টেল না ছেড়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষে ব্যাচ-কে ৭৯ এর আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “অধ্যক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। আবাসন সংকট সমাধানে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি, সোমবার ১২টার মধ্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ ও মন্ত্রণালয়ের টিম এসে ঝুঁকিপূর্ণ হলের অবস্থা পরিদর্শন করবেন। তা না হলে আমাদের আন্দোলন আরও কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।"
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ চিকিৎসক মো. কামরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে তারা একমত। তবে এজন্য কিছুটা সময় তারা চাইছেন বলেও জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল
তিনি বলেন, "ছাত্ররা একটা আশু সমাধান চায়, যে আজকেই তাদের একটা হল দিতে হবে। যেটা বাস্তবিক অর্থে সম্ভব নয়। আমরা তাদের দাবির সঙ্গে একমত।
আমরা আশা করছি তারা একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরে আসবে।"
কামরুল আলম বলেন, "আমাদের অধিকাংশ ছাত্ররা যারা এখনো আসতে পারে নাই, বাড়িতে আছে। তারা বুঝতে পারছে অন্য মেডিক্যাল লেখাপড়ায় এগিয়ে যাচ্ছে।প্রথম বর্ষের ওরিয়েন্টেশন হয়ে গেছে, তারা নিজেরা বুঝে হোক না বুঝে হোক তারা এটা বর্জন করেছে। তারা কলেজে আসার জন্য উদগ্রীব।"
শনিবার কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় মেডিকেল কলেজ বন্ধ এবং হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যক্ষ কামরুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন ও হোস্টেলের অবকাঠামোগত ‘দুরাবস্থা’ নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছেন। তাতে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা নিরসনে শনিবার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল একমত পোষণ করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে তারা নিয়মিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
নিরাপদ ক্যাম্পাস ও আবাসনসহ পাঁচ দফা দাবির আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা।
ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আবাসনজনিত নানা সংকটে ভুগছি, দুইটা হলের একটাও বসবাসের উপযোগী না। কয়েকদিন আগেও আমাদের হলের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। আমরা সেখানে থাকতে নিরাপদবোধ করছি না।”
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে
১. নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস করতে হবে।
২. ছাত্রাবাস নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করতে হবে।
৪. আবাসন ও অ্যাকাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন করতে হবে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঠিক করতে হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি