News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৩৪, ২৪ অক্টোবর ২০২০
আপডেট: ০৯:০০, ২৫ অক্টোবর ২০২০

দুর্গা বরণে আলপনায় সেজেছে কোলদের বিলবৈলঠা গ্রাম

দুর্গা বরণে আলপনায় সেজেছে কোলদের বিলবৈলঠা গ্রাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বিলবৈলঠা গ্রামে এবার দুর্গোৎসব হচ্ছে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির দেয়ালেই আঁকা হয়েছে রঙিন আলপনা।

আগে শুধু সাদা খড়িমাটি ও রঙিন মাটি দিয়ে আলপনা আঁকলেও এবার প্রথমবারের মতো রঙের ব্যবহার করা হয়েছে। আলপনায় নানা রঙের ব্যবহারের কারণে গ্রামটি এবার সেজেছে নতুন রূপে।

কোল সম্প্রদায় প্রতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে আলপনা আঁকে। কোলদের ভাষায় দুর্গাকে বলা হয় দাঁসে। এই দাঁসেই তাদের ঐতিহ্য আলপনাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে বিলবৈলঠা গ্রাম। ২৪টি কোল সম্প্রদায়ের পরিবার বাস করে এ গ্রামে । অন্যান্য বছর শুধু খড়িমাটি, চালের গুড়া, কাঠকয়লা, পোড়ামাটি দিয়ে আলপনা আঁকলেও এবার প্রথম ব্যবহার করা হচ্ছে রঙ। বাড়ির মেয়ে বা গৃহবধূ, দিনে রাতে সবাই মিলে দেয়ালে দেয়ালে মনের মাধুরী মিশিয়ে এঁকেছেন আলপনা।

দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে প্রতি বছরই আঁকা হয় আলপনা। তবে এবার প্রথম রঙিন করে আঁকা হয়েছে।

ওই গ্রামের গৃহবধূ ফুলবতি বলেন, “আমরা প্রতি বছরই দুর্গাপূজা উপলক্ষে আলপনা আঁকি। এ ছাড়া, বাড়িতে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান থাকলেও আলপনা করা হয়।”

বিলবৈলঠা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সারোদা রানী হাসদা বলেন, “বংশ পরম্পরায় তারা আলপনা আঁকছেন। গ্রামের নারী, বধূ ও কিশোরীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী আলপনা টিকিয়ে রেখেছেন, এটি আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ। কোল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী প্রকৃতিকে ভালবাসে, তাই প্রত্যেকেই স্বীয় মনের মাধুরী মিশিয়ে সৃষ্টি করে কল্পনার আপন ভুবন।”

তিনি জানান, প্রতি বছর গতানুগতিক ধারায় আলপনা করলেও এবার মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রঙের ব্যবহার করা হয়েছে।

“পাশেই বাবুডাইং বনভূমি, এটি দেখতে ও আমাদের গ্রামের সামনের রাস্তা দিয়ে পাখির উড়ে যাওয়ার ছবি তুলতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসেন, গবেষকরা আসেন। তাই এবার আমার গ্রামের দেয়ালগুলোতে নানা রঙ ব্যবহার করে আলপনা এঁকেছি। যাতে আমরা আমাদের সংস্কৃতিটাও তাদের কাছে তুলে ধরতে পারি”, বলেন তিনি।

বিলবৈলঠা গ্রামের মাঝি হারাম (মোড়ল) বিজলু কোল বলেন, “প্রতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমাদের মেয়েরা ঐতিহ্যবাহী আলপনা বংশ পরম্পরায় এঁকে আসছে। প্রতিটি বাড়ির দেয়ালেই আঁকা হয় আলপনা। এরা আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়