ঈদের সকালে শাহবাগে জামাল-হামজা-শিপনদের জামাত

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ সামনে রেখে ঈদের দিনেও কঠোর অনুশীলন ও জাতীয় দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। আগামী ১০ জুন ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। এই হাইভোল্টেজ ম্যাচকে ঘিরে চলছে নিবিড় প্রস্তুতি, যার ছায়া ঈদের ছুটিতেও পড়েনি।

রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থানরত জাতীয় দলের ক্যাম্পে ঈদের সকাল শুরু হয় ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী পরিবেশে। 

শনিবার (৭ জুন) সকাল ৭টায় মুসলিম খেলোয়াড়রা পাশের চাঁদ মসজিদে ঈদের জামাতে অংশ নেন। নামাজে অংশ নেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী, ফরোয়ার্ড ফাহমেদুল হক শিপন, ঈসা ফারুকসহ দলের অন্যান্য সদস্যরা।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) পক্ষ থেকে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় সাদা পাঞ্জাবি, যেটি পরে তারা নামাজে অংশ নেন। নামাজ শেষে আশপাশের মুসল্লিদের সঙ্গে কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ফুটবলাররা।

ঈদের নামাজে জাতীয় দলের সঙ্গে অংশ নেন বাফুফের নির্বাহী সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ, সাখওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহীন ও ইকবাল হোসেন। 

আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলতে দেশের মাটিতে পা রাখলেন হামজা চৌধুরি

নামাজ শেষে হোটেলে ফিরে সকালের নাস্তায় ছিল ঈদের বিশেষ আয়োজন— সেমাই ও ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন। এরপর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খেলোয়াড়দের সংক্ষিপ্ত ছুটি দেওয়া হয়। ঢাকায় যাদের পরিবার রয়েছে, তারা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কিছু সময় কাটাতে পারেন। অন্যরা চাইলে এই সময়টায় ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ক্যাম্পের বাইরে থাকতে পারেন।

তবে ছুটি খুবই সাময়িক। বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত জাতীয় স্টেডিয়ামে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার অধীনে নিয়মিত অনুশীলন হয়। দেশের হয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে বিন্দুমাত্র শিথিলতা নেই। ঈদের আনন্দের মাঝেও পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলার উদাহরণ রেখে চলেছেন জামাল-হামজারা।

নারী ফুটবল দলও রয়েছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের অভিযানে। আগামী জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে তাদের বাছাই পর্ব। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আফিদা-কৃষ্ণারা সদ্য শেষ করেছেন জর্ডানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ। তিন ধাপে তারা দেশে ফিরেছেন ঈদের আগের রাতে। ঈদের জন্য দুই দিনের বিরতি দেওয়া হলেও, অনেকে ক্যাম্পেই থেকে গেছেন যাওয়া-আসার ভোগান্তি এড়াতে।

নারী দলের জন্যও বাফুফে দিয়েছে ঈদ উপহার। ঈদের ছুটিতেও পেশাদারিত্ব ও জাতীয় দায়িত্বে অবিচল থেকে পুরুষ ও নারী উভয় দলের ফুটবলাররাই অনন্য উদাহরণ গড়েছেন। ঈদের উৎসবের মাঝেও দেশের প্রতিনিধিত্ব করার দায়বোধই যেন তাদের সবচেয়ে বড় আনন্দ।