News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:১৬, ২১ মে ২০২৫

রাখাইন ইস্যুতে করিডোর নয়, ত্রাণ চ্যানেল: নিরাপত্তা উপদেষ্টা

রাখাইন ইস্যুতে করিডোর নয়, ত্রাণ চ্যানেল: নিরাপত্তা উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশ থেকে কোনো ‘মানবিক করিডোর’ চালু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। 

তিনি বলেছেন, করিডোর নিয়ে বাংলাদেশের কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি এবং এ বিষয়ে কোনো ধরনের চুক্তিও হয়নি।

বুধবার (২১ মে) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই—মানবিক করিডোর নিয়ে আমাদের কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি এবং হবে না। করিডোর বলতে বোঝায় দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা। আমরা কাউকে সরাচ্ছি না, বরং জাতিসংঘকে সীমিতভাবে ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে একটি চ্যানেল ব্যবহার করতে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, রাখাইনে ত্রাণ প্রবেশের অন্যান্য পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে একটি ‘ত্রাণ চ্যানেল’ ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছে।

নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু আরাকানে সাহায্য সহযোগিতা অন্যান্য সাপ্লাই রুট দিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, জাতিসংঘ আমাদের অনুরোধ করেছে সীমিত সহায়তা দিতে, যাতে তারা সাহায্যগুলো বিকল্প পথে ভেতরে পৌঁছাতে পারে। 

আরও পড়ুন: প্রথম ধাপে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন আটকে পড়া ৮ হাজার কর্মী

খলিলুর রহমান পরিষ্কার করে বলেন, এটি কোনোভাবেই ‘করিডোর’ নয়। মানবিক করিডোর আর মানবিক চ্যানেল এক জিনিস নয়। এখানে কোনো চুক্তি, সমঝোতা, বা আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। জাতিসংঘ চাইছে সীমিত সহায়তা, আর আমরা কেবল সেটুকুই সহযোগিতা করছি।

তিনি জানান, জাতিসংঘ বিগত ছয়-সাত বছর ধরে বাংলাদেশের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে সহায়তা দিয়ে আসছে। রাখাইনের ভেতরে চলমান সংঘাতে ত্রাণ পাঠানোর বিষয়টি সম্পূর্ণ জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায়, এবং বাংলাদেশ কেবল ভূ-অবস্থানগত দিক থেকে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা প্রশ্ন তোলেন, অনেকে বলছেন আমরা করিডোর নিয়ে আলোচনা করিনি কেন। আমি বলতে চাই—অস্তিত্ববিহীন কোনো বিষয়ের সঙ্গে কীভাবে আলোচনা সম্ভব? যেখানে বাস্তবে করিডোরের প্রয়োজনই নেই, সেখানে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।

তিনি আরও বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি যতদিন অস্থিতিশীল থাকবে, ততদিন আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা বলতেই পারি না। প্রত্যাবাসনের পূর্বশর্ত এখনো তৈরি হয়নি।

এদিকে দেশের কিছু মহল থেকে এই তথাকথিত করিডোর বিষয়ে প্রশ্ন ও সমালোচনা উঠেছে। তাদের দাবি, এতে করে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।

অন্যদিকে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক বলেন, রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর অনুমতি নিয়েই জাতিসংঘ কাজ করে। আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণেই এমন সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আবারও জোর দিয়ে বলেন, এটি কোনো সামরিক বা বাণিজ্যিক চ্যানেল নয়, সম্পূর্ণ মানবিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটি সাময়িক ব্যবস্থা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়