বিমানবন্দরে ভারতফেরত যাত্রীদের স্ক্রিনিং জোরদার

ছবি: সংগৃহীত
ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায়, বাংলাদেশেও নেয়া হয়েছে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। বিশেষ করে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
ভারতের বিভিন্ন শহর – চেন্নাই, কলকাতা, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ ও মুম্বাই থেকে প্রতিদিনই ঢাকায় অবতরণ করছে একাধিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগো—এই চারটি এয়ারলাইন্স নিয়মিত এই রুটগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এই ফ্লাইটগুলোর প্রতিটি যাত্রীর ওপরই এখন কঠোর স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালাচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ জানান, ২ জুন থেকে আমরা ভারত থেকে আগত প্রতিটি ফ্লাইটের যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং করছি। পাশাপাশি মাস্ক ও পিপিই মজুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রতিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রী ইমিগ্রেশন পয়েন্টে পৌঁছানোর আগেই থার্মাল স্ক্যানার দ্বারা পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্ক্যানারের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিমাপ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে যাত্রীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও দিকনির্দেশনামূলক পোস্টার স্থাপন করা হয়েছে বিমানবন্দর চত্বরে।
আরও পড়ুন: বাড়ছে করোনা, শনাক্তের হার উদ্বেগজনক
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে বর্তমানে করোনা ভাইরাসে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪৯১ জন। শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫৮ জন। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে কেরালা রাজ্যে, যেখানে এখন সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৭ জন। এরপর রয়েছে গুজরাট (৯৮০), পশ্চিমবঙ্গ (৭৪৭), দিল্লি (৭২৮), কর্ণাটক (৪২৩) এবং মহারাষ্ট্র (৬০৭)।
ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গবিশিষ্ট এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করার আশঙ্কায় দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও সীমান্তবর্তী স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিরোধে নেওয়া হচ্ছে কঠোর ব্যবস্থা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং কার্যক্রম আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য চালু থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বর্তমানে একাধিক সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি, পুলিশ এবং এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো কঠোরভাবে কার্যকর থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি