News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ৮ জুন ২০২৫

রমজান-কালবৈশাখীর মাঝেই নির্বাচন: প্রেস সচিব

রমজান-কালবৈশাখীর মাঝেই নির্বাচন: প্রেস সচিব

ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষ থেকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে উত্তাপ ও বিতর্ক। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং তাদের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক জোটসমূহ এপ্রিল মাসকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচনা করতে নারাজ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘোষিত সময় নিয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে নানামুখী বিশ্লেষণ ও মন্তব্য। নির্বাচন কমিশনের বিধান অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের কমপক্ষে ৪৫ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করতে হয়। সেক্ষেত্রে যদি এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোট অনুষ্ঠিত হয়, তবে ফেব্রুয়ারির শেষদিকেই শুরু হবে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া।

এই সময়কাল জুড়েই চলবে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস। যার অর্থ, মনোনয়ন জমা, যাচাই-বাছাই, প্রতীক বরাদ্দসহ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী কার্যক্রমসমূহ গড়িয়ে যাবে রোজার মধ্যেই। ঈদের পরে প্রচার-প্রচারণা শুরু হলে তা এপ্রিলের মাঝামাঝি বা শেষভাগে এসে পৌঁছাবে, যখন আবহাওয়ার বৈরী আচরণ—বিশেষ করে কালবৈশাখী ঝড়ের—সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এই প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর মতো নয়। তার ভাষায়, রোজা ও জলবায়ুজনিত বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেই এপ্রিল মাসকে ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ধরে নিচ্ছি, এবার ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে ১৯ কিংবা ২০ মার্চে। সাধারণত রমজানের সময়ে তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রায় থাকে, ফলে প্রচারণায় বিঘ্ন ঘটার তেমন সম্ভাবনা নেই।

কালবৈশাখী ঝড় নিয়ে তিনি বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী এপ্রিলের প্রথম নয় দিন ঝড়ের ঝুঁকি কম থাকে। সাধারণত ১০ তারিখের পর থেকে আবহাওয়ার তারতম্য বাড়ে। সেই বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় ছিল।

আরও পড়ুন: ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে টেকসই অগ্রগতিতে জোর দিচ্ছে সরকার

তবে নির্বাচনের প্রস্তুতিপর্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে একাধিক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

বিশেষত, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে সক্রিয় অভ্যুত্থানপন্থী তরুণদের সমন্বয়, ‘জুলাই সনদ’ বা ‘জুলাই ঘোষণা’-এর মতো আলোচিত বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, বিতর্কমুক্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত এবং সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস—এইসব বিষয় দ্রুত সমাধান না হলে জটিলতা বাড়তে পারে।

প্রেস সচিব জানান, এই বাস্তবতা বিবেচনায় রেখেই এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবেই উল্লেখ করেছেন কেন এই সময় নির্বাচন প্রয়োজন। আমাদের কাজ কেবল নির্বাচন নয়—সংস্কার ও বিচারিক কাঠামোর উন্নয়নও আমাদের অগ্রাধিকার। তাই এপ্রিলে ভোটের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেন পূর্বনির্ধারিত রোডম্যাপ অনুযায়ী সংস্কার প্রক্রিয়াও এগিয়ে নেয়া যায়, — বলেন শফিকুল আলম।

তিনি যোগ করেন, আমাদের এই সরকারের ম্যান্ডেট নির্বাচন আয়োজনের বাইরেও বিস্তৃত। এটা কোনো তত্ত্বাবধায়ক কাঠামো নয় যেখানে শুধুমাত্র একটি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়।

রোডম্যাপ ঘোষণার আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রধান উপদেষ্টা। বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন ডিসেম্বরে আয়োজনের পক্ষে অবস্থান নেয়। 

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামি ও হেফাজতের মতো দলগুলো এপ্রিলের পক্ষে মত দেয়। 

সবশেষে, রাজনৈতিক আলোচনা ও অংশীজনের মতামত বিবেচনায় নিয়ে এপ্রিল মাসেই নির্বাচনের ঘোষণা দেন ড. ইউনূস। 

সূত্র: একাত্তর টেলিভিশন 

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়