জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সম্পন্ন

ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া এ জামাত শেষ হয় সকাল ৭টা ৪৩ মিনিটে।
দেশবরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক জামাতে ইমামতি ও খুতবা প্রদান করেন।
এই প্রধান জামাতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, রাজনৈতিক নেতারা, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ঢাকায় নিযুক্ত মুসলিম দেশের কূটনীতিক এবং সাধারণ মুসল্লিসহ হাজারো মানুষ। ঈদের নামাজ শেষে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় দোয়া করা হয়।
ঈদগাহে মুসল্লিদের আগমন শুরু হয় ফজরের নামাজের পর থেকেই। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশাল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। কাতারভর্তি মাঠে শিশু, নারী, পুরুষ—সবার অংশগ্রহণে ঈদের জামাত পরিণত হয় এক অনন্য মিলনমেলায়।
নারীদের জন্য ছিল পৃথক নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ও আলাদা প্রবেশপথ। অনেক শিশু বাবামায়ের হাত ধরে ঈদের জামাতে অংশ নেয়, যা পরিবেশে নিয়ে আসে এক আবেগঘন উচ্ছ্বাস।
এ বছর জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
আরও পড়ুন: ঈদের দিন কেমন থাকবে আবহাওয়া?
ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে সক্ষম হন। এর মধ্যে ভিআইপি ব্লকে নামাজ আদায়ের জন্য নির্ধারিত ছিল ২৫০ জনের স্থান।
ঈদগাহের পুরো এলাকা ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলে পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ছিল অজুর ব্যবস্থা, সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স। প্রস্তুত রাখা হয় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবেও—বৈরী আবহাওয়া হলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৮টায় জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি ছিল।
ঈদুল আজহার মূল বার্তা—ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গ—এদিন জীবন্ত হয়ে ওঠে। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে মুসলমানরা নামাজ শেষে পশু কোরবানি দেন। এই উৎসব ব্যক্তিকেন্দ্রিক না হয়ে সমাজজুড়ে আনন্দ ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান ইমাম ও অংশগ্রহণকারীরা।
সারাদেশে ঈদুল আজহার উৎসব পালনের অংশ হিসেবে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর ও গ্রামে সকাল থেকেই হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান ঈদগাহ ও মসজিদে সমবেত হন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানায়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে।
জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত প্রধান জামাত ছিল উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু, যা ধর্মীয় অনুভূতি, নাগরিক ঐক্য এবং নিরাপদ পরিবেশের এক সফল নিদর্শন হয়ে উঠে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি