উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক র্যাব: মুখপাত্র

ছবি: সংগৃহীত
ঈদুল আজহা নির্বিঘ্নে উদযাপন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাব সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী।
শুক্রবার (৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে র্যাব। এর আওতায় রাজধানীসহ সারাদেশে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো এবছরও র্যাব ফোর্সেস বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দেশের তালিকাভুক্ত সকল ঈদ জামাতস্থলে, যেমন—জাতীয় ঈদগাহ ময়দান, বায়তুল মোকাররম মসজিদ, শোলাকিয়া ঈদগাহ, দিনাজপুর বড় ঈদগাহসহ অন্যান্য ঈদগাহে নিরাপত্তা সুইপিংসহ জোরদার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, অবজারভেশন পোস্ট ও চেকপোস্ট; মোতায়েন রয়েছে স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল পেট্রোল টিম। ঈদগাহ এবং আশপাশ এলাকায় রয়েছে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি মনিটরিং। পাশাপাশি, যে কোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরমুখী মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে দেশের সকল বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল এবং ফেরিঘাটে বিশেষ নজরদারি ও টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, টিকিট কালোবাজারি, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, হয়রানি, চাঁদাবাজি, মলম পার্টি এবং ছিনতাই রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোনো ঈদ জামাতই নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার
বিশেষ করে ঢাকা অভিমুখী পশুবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে প্রতিটি মহাসড়কে নিয়মিত টহল এবং গোয়েন্দা নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র।
রাজধানী ও অন্যান্য বড় শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিপণি বিতান, শপিং মল ও বিনোদনকেন্দ্রে স্ট্যাটিক টহলের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এতে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে নিরাপদে কেনাকাটা শেষে ঘরে ফিরতে পারছে।
ঈদের ছুটিতে বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি খালি থাকার সুযোগে যেন কোনো অপরাধ সংঘটিত না হয়—সে লক্ষ্যে র্যাবের টহল ও নজরদারি কার্যক্রম আরও তৎপর করা হয়েছে।
মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির সক্রিয়তা সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাবের মুখপাত্র জানান, আমার মনে হয় এসব অপরাধ কমেছে। কারণ গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমন, রংপুরে ইতোমধ্যে ১৩ জনকে এবং সিলেটেও কয়েকজন মলম পার্টির সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপের কারণে দেশে একটি বার্তা গেছে—যারা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এর প্রমাণ হচ্ছে, এবার সংবাদমাধ্যমে মলম পার্টি সংক্রান্ত খবর তুলনামূলকভাবে অনেক কম এসেছে। র্যাবের অ্যাকশন ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জরুরি প্রয়োজনে দেশের সাধারণ জনগণ ও পশু ব্যবসায়ীরা র্যাবের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সহযোগিতা নিতে পারবেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে র্যাব তাৎক্ষণিক সাড়া দেবে বলে আশ্বাস দেন এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ যেন নিরাপদে ও আনন্দঘন পরিবেশে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ উদ্দেশ্যে র্যাব সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি