কোনো ঈদ জামাতই নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার

ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকায় কোনো ঈদ জামাতই নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
তিনি বলেন, রাজধানীতে ঈদ উপলক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে সমন্বিত, সুদৃঢ় ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার জানান, এ বছর ঢাকায় মোট ১১৮টি ঈদগাহ এবং ১৬২১টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও শিয়া ও কাদিয়ানি সম্প্রদায় কর্তৃক ৮টি এবং সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ৩টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় ঈদগাহে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। এখানে প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, বিচারপতিগণ, উপদেষ্টাবৃন্দ, ঢাকাস্থ মুসলিম দেশের কূটনীতিক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করবেন। সর্বমোট ৩৫ হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
জাতীয় ঈদগাহে ৪টি পুরুষ এবং ১টি নারী গেটসহ মোট ৫টি গেট দিয়ে মুসল্লিরা প্রবেশ করবেন। প্রবেশের সময় আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়াল তল্লাশি থাকবে। নারীদের জন্য থাকবে পৃথক প্রবেশপথ, নামাজের ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তা নিয়ে শতভাগ কনফিডেন্ট স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিকল্প হিসেবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে জাতীয় ঈদগাহের প্রধান জামাতটি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মোকাররমে মোট ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে, যার প্রথমটি শুরু হবে সকাল ৭টায়।
জাতীয় ঈদগাহ ও আশেপাশের এলাকায় ইতোমধ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। স্থাপিত হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম, যেখান থেকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ চলছে।
ঈদগাহে প্রবেশপথে মৎস্য ভবন ক্রসিং, প্রেসক্লাবের সামনে ও হাইকোর্ট ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড ও তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। গোটা এলাকা নিরাপত্তার বলয়ে ঘেরা থাকবে এবং এসবি’র সুইপিং টিম, সিটিটিসি’র ডগ স্কোয়াড দ্বারা এলাকা সুইপিং করা হবে।
ডিএমপির সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডিবি ও সিটিটিসি’র সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর পাশাপাশি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি ক্রাইম বিভাগ ঈদগাহ আয়োজক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কেন্দ্রিক একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি কার্যক্রমে সহায়তা করুন। ঈদ জামাতে কোনো ব্যাগ, ধারালো বস্তু বা দাহ্য পদার্থ সঙ্গে আনবেন না। জামাত শেষে তাড়াহুড়ো না করে সুশৃঙ্খলভাবে বের হোন। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে পুলিশকে জানাবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাতে ৫০০টি ও দিনে ২৫০টি পেট্রোল টিম দায়িত্ব পালন করবে। থাকবে গাড়ি, ফুট ও মোবাইল পেট্রোল। অফিসভিত্তিক কর্মকর্তাদেরও মাঠে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে যাতে তারা সুপারভিশন করতে পারেন। প্রতিটি চেকপোস্টে তল্লাশি চলবে।
তিনি আরও বলেন, নগরবাসীর সহযোগিতা ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ঈদের ছুটিতে আপনারা পুলিশের দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ করুন। কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সিটি কর্পোরেশনকে সহায়তা করুন এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ বা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করুন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি