ঈদযাত্রায় বাসে ছদ্মবেশী ডাকাত ঠেকাতে ছবি বাধ্যতামূলক

ছবি: নিউজবাংলাদেশ
ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে বাসে ছদ্মবেশে ডাকাতি ঠেকাতে এবার প্রতিটি যাত্রীর ছবি তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, অদক্ষ চালকদের নিয়ন্ত্রণ, এবং নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের তদারকিতে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, যাত্রীর ছদ্মবেশে ডাকাত উঠে পড়ে। তাই এবার বাসে ওঠার সময় স্টপেজ অনুযায়ী প্রতিটি যাত্রীর ছবি তুলে রাখা হবে। এই কাজটি বাস কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকবে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরবরাহ করা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, ছবি তোলার পর নির্দিষ্ট স্টপেজ থেকে দরজা লক করে দেওয়া হবে, যাতে পথে যাত্রী তোলা না হয়। এ ছাড়া প্রতিটি বাসে থাকা তিনজন কর্মী (চালক, সহকারী ও অতিরিক্ত এক ব্যক্তি) সরাসরি বাস মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন। কোনো ঝামেলা বা সন্দেহজনক ঘটনা ঘটলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
বাসভাড়া নিয়েও এবার কড়া তদারকির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ঈদের আগে ও পরে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় নিশ্চিত করতে একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাকরিজীবী ও পেনশনভোগীদের জন্য ‘বিশেষ সুবিধা’ কার্যকর করল সরকার
তিনি বলেন, গতবার ফেরার পথে কিছু এলাকায় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। এবার মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছে, নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে কিছুই নেওয়া হবে না।
গাড়ির মান নিয়েও সতর্কবার্তা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রং করে রাস্তায় নামানো হয়। এবার এই ধরনের গাড়ি চলাচলে কড়াকড়ি থাকবে। অদক্ষ চালকদের দিয়ে গাড়ি চালানোও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চালকদের যথাযথ বিশ্রামের বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দূরপাল্লার বাস চালানোর আগে ও পরে চালকদের বিশ্রাম নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে পরিবহন মালিকদের।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এবারের কোরবানির ঈদে যাত্রী ও পশুবাহী যানবাহনের চাপ মাথায় রেখে সড়ক, নৌ ও রেলপথে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ ফেরি সার্ভিস চালু থাকবে কাজির হাট ও আরিচা ঘাটে, যাতে উত্তরবঙ্গ থেকে পশু ও যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্নে সম্ভব হয়।
সব মিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, যাত্রীরা যেন নিরাপদে এবং স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে জন্য আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি