কক্সবাজারে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ, রোহিঙ্গাসহ শনাক্ত ৫

ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গত সাত দিনে জেলায় নতুন করে পাঁচজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং দুইজন রোহিঙ্গা।
চিকিৎসকরা বলছেন, ঈদুল আজহার ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ঢল, রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাফেরা এবং স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার কারণেই সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত ৪ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৩১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে কেউ কেউ হালকা উপসর্গ নিয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। তবে, নতুন এই সংক্রমণকে ‘সতর্ক সংকেত’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটক ভিড় করেন কক্সবাজারে। এ সময় উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে শত শত রোহিঙ্গাও এসে সৈকতে ঘোরাফেরা করে। তাদের অনেকে রাত কাটিয়েছেন হোটেল ও কটেজে।
তবে রোহিঙ্গাদের সমুদ্রসৈকতে প্রবেশ ঠেকাতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই মাস্ক পরেননি। সামাজিক দূরত্বও মানেননি কেউ।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ৫, হাসপাতালে ১৫৯
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই অব্যবস্থাপনা করোনার নতুন বিস্তার ঘটাতে পারে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক বলেন, কক্সবাজার এমনিতেই সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এখানকার সৈকতে দৈনিক লাখো মানুষের সমাগম হয়। পাশাপাশি উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে ১৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নিতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারির মধ্যে কক্সবাজার জেলায় করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ২৮৯ জন। এর মধ্যে ৩৪ জন ছিলেন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন নিউজবাংলাদেশকে জানান, সৈকতে ভিড় এড়াতে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাইকিং এবং প্রচার চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগ, পৌরসভা ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে আইসোলেশন সেন্টার চালু এবং হাসপাতালগুলোতে করোনা ইউনিট পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষকদের মতে, এখনই প্রয়োজন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, না হলে ঈদের পরবর্তী সময়ে সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি