শাহাদাত বুলবুলের বিখ্যাত কবিতা ‘আশা চিঠি দিও’

শাহাদাত বুলবুল। কবি। জন্ম ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৬, লক্ষ্মীপুর। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু। পঁচাত্তরের বাকশাল প্রবর্তনের পর সংবাদকর্মী হিসেবে সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী হিসেবে যোগদান। মৃত্যু ৩ মে ২০১১। ৬৫ বছর আয়ুষ্কালে লিখেছেন অজস্র কবিতা। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : অন্য রকম নির্মাণ, দুই ভুবনের মানুষ, বিশ্বাস জানিয়ে দাও অনন্তকে। ছড়াগ্রন্থ : ডালে ডালে পাতায় পাতায়। পাণ্ডুলিপি রেখে গেছেন দুটি : গালগপ্পে দিন যায়, যুদ্ধ দিনের কবিতা।
বিখ্যাত কবিতা:
আশা চিঠি দিও
বুকের আগুন দিয়ে প্রতিদিন চিঠি লিখি
কোন উত্তর পাই না। একটি, দুইটি করে প্রজাপতি
রাজরূপে উড়ে আসে, বন্যা আসে,
দুর্ভিক্ষের সংবাদ নিয়ে আসে একজন-
শুধু আশাই আসে না। আশা কার ঘরে?
প্রেমপুর কতোদূর? কোন পথে যেতে হয়?
প্রতিদিন চিঠি লিখতে গিয়ে ভুলে গেছি জননীর
নাম, প্রিয় কবিতার কথা মনে নেই, শৈশবের ধূলি
ওড়া পথ-ঘাট ভুলে গেছি,
কারা কবে প্রিয় সাথী, বন্ধু ছিলো, কি কি নাম?
চিঠি লিখতে লিখতে সব ভুলে গেছি!
স্মৃতিভ্রম, অন্ধ আমি। প্রেমপুর কোন দিকে?
দৈর্ঘ্য-প্রস্থে কতোটুকু মাটি?
সেখানে কারা থাকে? প্রেমপুরে কি কি থাকে?
পশু, না মানুষ?
শিকারী শিকার ভ্রমণে যায়, হেসে গেয়ে ফিরে
আসে, রাজা যায়, রাজার দুলাল যায়, দুলদুল যায়
ফিরে আসে, ঘরে আসে। কেউ তার খবর দেয় না।
প্রেমপুর কতোদূর? আশা তুমি কার ঘরে?
প্রেমপুর থেকে কতো ক্রোশ দূরে আছো তুমি?
কতো মাইল সীমানা পেরুতে হবে আর?
তোমার বাড়ির ব্যাপ্তি কতোটুকু
আশা... আশা...
বুকের আগুন দিয়ে প্রতিদিন চিঠি লিখি
প্রতি উত্তর পাই না । একবার, শুধু একটিবার
কবিকে চিঠি দিও, চিঠি দিও, আশা তুমি চিঠি দিও।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ